ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই ( রাঙামাটি)
কোটা সংস্কার ঘিরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, কারফিউ জারি, শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং পরবর্তী সহিংসতার প্রভাব পড়েছে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার পর্যটনশিল্পে। এমনিতে উপজেলাটিতে বছরজুড়েই পর্যটকের আনাগোনা থাকলেও এখন ফাঁকা পড়ে আছে রিসোর্ট, কটেজসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এগুলোর ওপর নির্ভরশীল মানুষ।
একপাশে কাপ্তাই লেক এবং অন্য পাশে সীতা পাহাড় ও কর্ণফুলী নদী ঘেরা কাপ্তাই উপজেলায় আছে ছোট-বড় অনেক ঝরনাসহ চমৎকার সব পর্যটন স্পট, যা দেখতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসেন। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাপ্তাই উপজেলার বেশ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় বেশির ভাগই ফাঁকা। দুই-একটি জায়গায় পর্যটক থাকলেও সংখ্যায় একেবারেই কম।
কথা হয় শিলছড়ি নিসর্গ রিভার ভ্যালি অ্যান্ড পড হাউজের ম্যানেজার মাসুদ তালুকদার এবং দায়িত্বরত কর্মকর্তা মিনহাজ উদ্দিনের সঙ্গে। তাঁরা জানান, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে এখানে গত এক মাস ধরে পর্যটক নেই বললেই চলে। ৪০ জনের মতো কর্মীর বেতন দিতে কষ্ট হচ্ছে। অথচ এই রিসোর্ট সব সময় পর্যটকে ভরপুর থাকত।
নিসর্গ কুটির নামের অপর একটি রিসোর্টের মালিক মো. নাছিম আহমেদ বলেন, ‘পর্যটকদের ঘিরে আমাদের ব্যবসা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আমাদের ব্যবসায় মন্দাভাব চলছে। পর্যটক না আসায় অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তবে আশা করছি ধীরে ধীরে এই মন্দাভাব কেটে যাবে।’
বোটচালক মো. তানজির হোসেন ফরহাদ বলেন, ‘গত এক মাস ধরে পর্যটকশূন্য এই এলাকা। আমরা সপ্তাহে একটা ভাড়াও পাই না।’
কাপ্তাই শহীদ মোয়াজ্জেম নৌঘাঁটি পরিচালিত লেক প্যারাডাইস, ৪১ বিজিবি পরিচালিত ওয়াগ্গাছড়া প্যানোরোমা জুম রেস্তোরাঁ, সেনাবাহিনী পরিচালিত কাপ্তাই জেটিঘাটের বিপরীতে অবস্থিত লেকভিউ পিকনিক স্পটে গিয়েও একই চিত্র দেখেন। পর্যটক নেই বললেই চলে। তবে হতাশা প্রকাশের পাশাপাশি পর্যটনসংশ্লিষ্টরা আশায় বুক বাঁধছেন, নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ায় ধীরে ধীরে কাপ্তাইয়ের পর্যটনশিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।