নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রায় ৩৩ বছর পর চট্টগ্রামে একসঙ্গে ১৬ উপজেলা আবার বন্যা কবলিত হয়েছে। তাতে অন্তত ৫০ হাজার পরিবারের প্রায় ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এর আগে ১৯৯১ সালে ভয়াল জলোচ্ছ্বাসে জেলার সব উপজেলায় পানি উঠেছিল।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভারী বর্ষণের কারণে পানি আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তাতে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চলের বসতঘর। এ কারণে অসহনীয় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, আনোয়ারা, সীতাকুণ্ড, বোয়ালখালী, ফটিকছড়িসহ ১৬ উপজেলা দুর্যোগকবলিত। তাতে অন্তত ৫০ হাজার পরিবারের প্রায় ৩ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ফটিকছড়ি উপজেলায় ১৩টি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ায় ৩ হাজার ১৭৫ পরিবার পানিবন্দী এবং প্রায় ১৫ হাজার ৯০০ জন ক্ষতিগ্রস্ত। মীরসরাই উপজেলায় ১২টি ইউনিয়নে ১২ হাজার পানিবন্দী পরিবারের প্রায় ৬০ হাজার জন ক্ষতিগ্রস্ত এবং সীতাকুণ্ড উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়নে ৫ হাজার পরিবারের প্রায় ২০ হাজার লোক পানিবন্দী। এ ছাড়া আনোয়ার, বোয়ালখালীসহ অন্যান্য ১৬ উপজেলায়ও বহু মানুষ পানিতে বন্দী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর অধিকাংশ এলাকার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। নগরের বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, মোহাম্মদপুর, শুলকবহর, বাদুড়তলা, চকবাজার, বাকলিয়া, রাহাত্তারপুল, ডিসি রোড, আগ্রাবাদের সড়কে যানচলাচল একেবারে সীমিত, সড়কে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি। এসব এলাকার অনেক বাসাবাড়ির নিচতলায় পানি ঢুকে গেছে।
নগরীর রাহাত্তারপুল এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হুদা বলেন, ‘আমাদের এলাকার অধিকাংশ বাসার নিচতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে।’
চট্টগ্রামসহ আশপাশের জেলায় আজ বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তাতে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে ভূমিধস ও বন্যার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র এবং আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় ফটিকছড়ি ২০, মীরসরাইয়ে ২০ ও সীতাকুণ্ডে ১০ মেট্রিক টন টাল বিতরণ করা হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় ইতিমধ্যে ২৩২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং গঠিত ১২৭টি মেডিকেল টিমের সব কটি চালু আছে।