দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার দেবিদ্বারে গোমতীর চর ঘিরে স্বপ্ন বুনছেন দু’পাড়ের শত শত কৃষক। শীতের শুরুতে চরের উর্বর মাটিতে শীতকালীন বিভিন্ন শাক-সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা। আধুনিক কৃষির ছোঁয়া না লাগলেও কৃষকদের শ্রমে-ঘামে রঙিন হয়ে উঠেছে গোমতীর বিস্তীর্ণ চর। শাক-সবজির শুভ্র হাসি ফসলের মাঠে মাঠে।
জানা গেছে, চরের শাক-সবজি সুস্বাদু হওয়ায় স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা বেশি। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকাররা এসে জমি থেকে ফসল কিনে নিয়ে যান। তবে শীতকালেই পাইকাররা বেশি আসেন এ চরে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শীত মৌসুম শুরুর আগে লাল শাক, পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়া, পালং শাক, ধনেপাতা, আখ, মুলা, ঢ্যাঁড়স, গোল আলু, শিম, মিষ্টি আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ নানা জাতের শাক-সবজির পরিচর্চা করছেন কৃষকেরা। কেউ কেউ বেশি লাভের আশায় একই জমিতে তিন-চার রকমের শাক সবজির পরিচর্চা করছেন। নিড়ানি, জমির আইল বাধা, কীটনাশক ছিটানোসহ নানা কাজ করছেন তাঁরা। তাঁদের এ কাজে সহযোগিতা করছেন নারীরাও।
এ চরে কোনো মৌসুমেই বাদ যায় না চাষাবাদ। শীত মৌসুমে এ চরে শাক-সবজির বাম্পার ফলন হয়। কৃষক বাবুল মিয়া ৬০ শতক জমিতে দেশি শসা চাষ করেছেন। তিনি জানান, এবার শসার উৎপাদন ভালো হয়েছে। প্রতি মণ শসা ভালো দামেও বিক্রি হয়েছে। এলাকার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি তাঁর শসা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
লেখা পড়ার পাশাপাশি চরের ৫২ শতক জমিতে চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন চরের বাসিন্দা সাব্বির হোসেন। সাব্বির হোসেন বলেন, পড়ালেখার ফাঁকে জমি পরিচর্চা করি। বর্তমানে বেগুন, ঝিঙে, করলা, শশী ও মরিচ রয়েছে। এসব চাষ করে সংসার ও পড়ালেখা খরচ চালাই।
উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান বলেন, যে চর পতিত থাকার কথা ছিল ওই চরে কৃষকের হাতের ছোঁয়ায় সোনা ফলছে। গোমতীর এ চরে বারো মাসই ফলন হয়। নদীর দু’পাশের কৃষকেরা স্ব-উদ্যোগে এসব জমি চাষাবাদ করে আসছেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন সময়ে চরের কৃষকদের বীজ ও সার প্রণোদনা দেওয়া হয়।