নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় হামলাকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন নিহতের শ্বশুর রেজাউল হক। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চৌমুহনী পৌরসভার হাজীপুর এলাকার বাদশা মিয়ার বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর নাম শাহনাজ আক্তার পিংকি (৩৪)। তিনি চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নোয়া বাড়ির কুয়েত প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী। ছুরিকাঘাতে হত্যা করা অভিযুক্তের নাম সাইফুল ইসলাম খালেদ (৩০)। তিনি একই বাড়ির লিটনের ছেলে, সম্পর্কে গৃহবধূর দেবর হয়। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।
নিহতের বোন ফারজানা আক্তার সুমি বলেন, পারিবারিকভাবে ১৬ বছর আগে পিংকির সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিয়ে হয়। বছর খানেক আগে পিংকির ব্যবহৃত মোবাইল নষ্ট হলে সেটি ঠিক করার জন্য খালেদকে দেয়। ওই সময় খালেদ পিংকির মোবাইল থেকে ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিও নিজের মোবাইলে নিয়ে নেয়। এরপর ওই ছবি ও ভিডিও দিয়ে পিংকিকে ব্ল্যাকমেল করে ৭ লাখ টাকা আদায় করে। তাঁকে কু-প্রস্তাব দেয়। এরপর আরও টাকা দাবি করে এবং পরকীয়ায় ব্যর্থ হয়ে ক্ষিপ্ত হয়। কিছুদিন আগে এ নিয়ে আদালতে মামলা করে পিংকি। গত দুই মাস আগে পিংকির স্বামী দেশে আসলে এসব বিষয় নিয়ে তার ওপর হামলা করে খালেদ।
নিহতের দুলাভাই বাবর হোসেন বলেন, সকালে স্বামীর বাড়ি থেকে শ্বশুর রেজাউল হকের সঙ্গে চৌমুহনী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন পিংকি। এ সময় তাঁরা চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাদশা মিয়ার বাড়ির সামনে পৌঁছালে খালেদ তাদের গতি রোধ করে। সেখানে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে পিংকিকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে খালেদ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। তখন পুত্রবধূকে বাঁচাতে চেষ্টা করলে রেজাউল হোসনকেও ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে চৌমুহনী লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক পিংকিকে মৃত ঘোষণা করেন।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, নিহত গৃহবধূ ও হত্যাকারী পূর্ব পরিচিত। তাদের নিজেদের মধ্যে কোনো ঝামেলার কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত চুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে ও অভিযুক্তকে ধরতে চেষ্টা চলছে।