আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে সৎমায়ের বিরুদ্ধে পানিতে ডুবিয়ে শিশু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের চেঙ্গামুড়া গ্রামের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে স্থানীয় লোকজন শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। শিশুটির নাম জান্নাতুল মাওয়া (৪)।
আজ বুধবার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে শিশুটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। এ ঘটনায় পুলিশ শিশুটির সৎমা রেহানা বেগমকে (৩৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লালপুর চেঙ্গামুড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তাজুল ইসলামের ছেলে কবির হোসেন গত দুই বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তাঁর প্রথম স্ত্রী দেড় বছরের শিশুকন্যা জান্নাতকে দাদা-দাদির কাছে রেখে বাধ্য হয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। বাবা-মায়ের সংসার ভেঙে যাওয়ার পর থেকে দাদা ও দাদির কাছেই বড় হতে থাকে জান্নাত। এরই মধ্যে কবির হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী কন্যাশিশুর জন্ম দেন। দাদা-দাদি জান্নাতকে বেশি আদর করেন—এ নিয়ে ঈর্ষা শুরু করেন রেহানা বেগম। তিনি শিশু জান্নাতের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে থাকেন। জান্নাতের দাদা-দাদি বাড়ির বাইরে গেলে স্থানীয় লোকজন সৎমাকে ১০ মাস বয়সী নিজের শিশুর পাশাপাশি সৎমেয়ে জান্নাতকে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে নামাতে দেখেন। কিন্তু পুকুর থেকে উঠে আসার সময় রেহানা শুধু নিজের মেয়েকে নিয়ে উঠলে প্রত্যক্ষদর্শী লোকজনের সন্দেহ হয়। পরে তাঁরা রেহানাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারেন, জান্নাত পানিতে ডুবে গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় লোকজন পুকুরে নেমে খোঁজাখুঁজি করে জান্নাতের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠায়।
এ ব্যাপারে নিহত শিশু জান্নাতের দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, 'সৎমা রেহানা জান্নাতকে গলা টিপে ও পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছে। আমরা তার ফাঁসি চাই।'
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজাদ রহমান বলেন, 'খবর পেয়ে আমি নিজেই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শিশুটির সৎমাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযোগ ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'