টাকা না পেলে ফেনীর আদালতের ইন্সপেক্টর গোলাম জিলানী ফাইল আটকে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁর এই আটকে দেওয়া থেকে বাদ যায় না জামিনের ফাইলও। এমনই একটি ফাইলের বিষয়ে জানতে গেলে নাজমুস সাকিব নামে একজন আইনজীবীকে আদালতে লাঞ্ছিত করার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
লাঞ্ছনার শিকার অ্যাডভোকেট নাজমুস সাকিব বলেন, ‘২ জানুয়ারি রোববার মনির আহমেদ নামে এক ব্যক্তির জামিন দেন আদালত। জামিননামাটি যথাসময় না পৌঁছানোর কারণ জানতে চাইলে কোর্ট পরিদর্শক জিলানী আমার মোবাইল ফোনটা কেড়ে নিয়ে তাঁর অফিস থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। পুরো ঘটনাটি তাঁর রুমে সিসি ক্যামেরায় রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করেছি ও আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নুর হোসেন বলেন, লিখিত অভিযোগ করে বিচার চেয়েছেন নাজমুস সাকিব নামে একজন আইনজীবী। এ প্রসঙ্গে আগামীকাল একটি জরুরি সভা হবে; সেখানে সিদ্ধান্ত হবে। ফেনীর আদালতে যোগদানের পর থেকে ওসি গোলাম জিলানী বেপরোয়া বলে তিনি দাবি করেন। দুই বছরের বেশি সময় ধরে জিলানী এখানে কর্মরত রয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ওসি টাকা ছাড়া কিছু বোঝে না। সব অনিয়ম টাকা পেলে নিয়মে পরিণত হয়ে যায়। টাকা না দিলে জামিননামার কপিও আটকে রাখেন। এতে প্রতিবাদ করলে অ্যাডভোকেট নাজমুস সাকিবকে লাঞ্ছিত করেন জিলানী।
ওই জামিননামা প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট নুর হোসেন বলেন, ফেনীর ডিসির রুম থেকে অস্ত্র ঠেকিয়ে এক ঠিকাদারকে অপহরণ করার ঘটনায় গত ১২ অক্টোবর চার্জশিট প্রদান করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই চার্জশিটটি আদালতে উপস্থাপন করেননি এই কর্মকর্তা। এ ছাড়া অনেক অপরাধীকে বাঁচাতে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চার্জশিট নিজের কাছে রেখে দেওয়ার অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে।
ফেনী আইনজীবী সমিতির সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম নান্টু ও মানিক চন্দ্র শর্মা বলেন, ফেনীর আদালতের পুলিশ টাকা ছাড়া কোনো কাজ করে না। টাকা দিয়ে সেবা নিতে হয়।
তবে অভিযুক্ত কোর্ট পরিদর্শক মো. গোলাম জিলানী অ্যাডভোকেট সাকিবের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর মন্তব্য, জামিননামার কাগজের খোঁজ করে এক আইনজীবী তাঁর কথোপকথন ভিডিও ধারণ করলে তিনি তাঁর মোবাইল সেটটি রেখে দেন।