বন্ধুর মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আল বন্দর নামে এক কুয়েতি নাগরিক এসেছেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া গ্রামে। বন্ধুর মেয়ের গায়েহলুদের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ বিয়ের অনুষ্ঠানসহ এখন দেশের সবুজ প্রকৃতির প্রতি মুগ্ধতা প্রকাশ করছেন তিনি। এদিকে বাংলাদেশে তাঁকে পেয়ে আনন্দিত তাঁর বন্ধু ওই গ্রামের ইকবাল হোসেনসহ গ্রামবাসীও।
আজ শনিবার সকালে ইকবাল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কুয়েতি নাগরিক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আল বন্দর এলাকার কৃষিখেতে নেমে ঘুরে ঘুরে দেখছেন। তিনি ফসলি মাঠের প্রতিটি সবজি ধরে দেখছেন। নিজের মোবাইল ফোনের সেগুলো ক্যামেরাবন্দী করছেন। কখনো নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি না আসলে বুঝতেই পারতাম না, বাংলাদেশে বিয়ে এত সুন্দর হয়। আমাদের দেশে সাধারণত অনুষ্ঠান এভাবে হয় না। বিশেষ করে গায়েহলুদের অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত আনন্দের। আমি বর এবং আমার বন্ধুর মেয়েকে দোয়া করি তারা যেন সুখী হয়।’
ইকবাল হোসেনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে এই কুয়েতি নাগরিক এ দেশে এসেছেন। বাংলাদেশে যত দিন থাকবেন, তত দিন এখানে থাকবেন বলে জানালেন ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘ওনার পুরো নাম মোহাম্মদ আবদুল্লাহ তাহের আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আল বন্দর। কুয়েতের আহম্মেদি প্রদেশের হাতিয়া শহরের বাসিন্দা। একসময়ে সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। বর্তমানে অবসর নিয়েছেন।’
পরিচয় সম্পর্কে বলেন, ‘২০১৫ সালে কুয়েতে যাই। সেখানে বিভিন্ন কাজের সুবাদে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ডিসেম্বর মাসে আমার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপির বিয়ের বিষয়টা জানালে সে বিয়েতে অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করে। তারই ধারাবাহিকতায় সে ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসে। সে বর্তমানে আমার বাড়িতেই অবস্থান করছে এবং যত দিন বাংলাদেশে থাকবে তত দিন আমার বাড়িতেই অবস্থান করবে।’
ওই গ্রামের বাসিন্দা এস এন ইউসুফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্রামগঞ্জে এ ধরনের অনুষ্ঠানে ভিনদেশি কোনো নাগরিকের উপস্থিতি সত্যিই আনন্দের। কুয়েতি নাগরিক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আল বন্দর আমাদের গ্রামে এ বিয়েতে অংশগ্রহণ করাতে বিয়ের উৎসব আরও দ্বিগুণ হয়েছে। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশের কৃষিপণ্য দেখে আবেগে আপ্লুত হয়েছেন। আরবি ভাষায় নিজের অভিমতগুলো প্রকাশ করছেন।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লোক মারফতে জানতে পেরেছি একজন কুয়েতি নাগরিক চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়নে তাঁর বন্ধুর মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছেন। তিনি বেশ কিছুদিন বাংলাদেশে অবস্থান করবেন। কুয়েত বাংলাদেশের একটি অকৃত্রিম বন্ধু। বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নে কুয়েতের অংশগ্রহণ অবিস্মরণীয়। কুয়েতি নাগরিকের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি। তাঁর আগমনে আমরা স্বাগত জানাই।’