মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আরও ১৭ জান্তা সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ, হ্যান্ড গ্রেনেড, ম্যাগাজিন ও মিয়ানমারের ৩ লক্ষাধিক টাকা জব্দ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিজিবি সূত্রগুলো জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৭টায় প্রথম দফায় জান্তা বাহিনীর ১০ সদস্য বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর ইউনিয়নের ৪৫ নম্বর সীমান্ত দিয়ে জামছড়ি গ্রামে আসেন। সেখানে ১১ বিজিবির অধীন জামছড়ি বিওপি জোয়ানদের কাছে তাঁরা আত্মসমর্পণ করেন। একই পয়েন্ট থেকে বেলা আড়াইটায় আসেন আরও পাঁচজন। তাঁরাও একই স্থান দিয়ে এসে একই বিওপি জোয়ানদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
একই দিন সকাল ১০টায় পৃথক স্থান ঘুমধুম সীমান্তের ৪০ নম্বর পিলারের বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড ৩৪ বিজিবি এলাকা দিয়ে জান্তা বাহিনীর দুই সেনা কর্মকর্তা সীমান্তের রেজুপাড়া বিওপি জোয়ানদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
সূত্র মতে, তাঁদের কাছ থেকে জব্দ করা অস্ত্র-গোলাবারুদ রামু বিজিবি সেক্টর দপ্তরে জমা করা হয়েছে। তাঁদেরও নিরস্ত্র করে মোট ১৭ জনকে নাইক্ষ্যংছড়িতে এনে বিজিবি স্কুলে রাখা হয়।
এর আগে গত রোববার ও সোমবার বাংলাদেশে আশ্রয় নেন ১৬ জন জান্তা বাহিনীর সদস্য। তিন দিনে মোট ৩৩ জন জান্তা বাহিনীর সদস্য বাংলাদেশে এল। তাঁদের সকলকে রাখা হয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিচতলায়।
এই স্কুলে আগে থেকে ১৮০ জান্তা সদস্য আশ্রিত রয়েছেন। ৩৩ জন যোগ হওয়ায় মোট আশ্রিতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৩ জনে। তাঁদের মধ্যে অসুস্থ তিনজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলে বিজিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, কোনো প্রকার জটিলতা সৃষ্টি না হলে চলতি এপ্রিলেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা জান্তা সদস্যদের তাঁদের দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
মঙ্গলবার পালিয়ে আসাদের বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন, তাঁর এলাকা দিয়ে ১৫ জান্তা সদস্য ইউনিয়নের জামছড়ি গ্রামে দুই দফায় আসেন সকালে আর দুপুরে। তাঁদেরকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে আগের জান্তা সদস্যদের সঙ্গে রাখা হয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে দেখা গেছে। পাশাপাশি তিনিও তাঁর পরিষদের মেম্বার ও গ্রাম পুলিশদের সীমান্ত পয়েন্টে সতর্ক থাকতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এদিকে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মো. মুজাহিদ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, মঙ্গলবার ৩ দফায় পৃথক দুই সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ১৭ জান্তা বাহিনীর সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। তাঁদের নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে মানবিক সেবাসহ রাখা হয়েছে। তাঁদের তিনজনকে অন্যত্র চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, বুধবার সকাল ১০টার পর সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও সরেজমিন দেখতে নাইক্ষ্যংছড়িতে আসার কথা রয়েছে বিজিবি মহাপরিচালকের।