কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মো. নাদিম হোসেন (৩৫) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁরই আপন ভাই নাঈমের বিরুদ্ধে। চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার রামচন্দ্রপুর পূর্বপাড়ায় শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নাদিমের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা।
নিহতের স্ত্রী শাহিনুর বলেন, ‘শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমার স্বামী নাদিম তার মায়ের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। একপর্যায়ে সে তার মাকে ধাক্কা দিলে আমার দেবর নাঈম ক্ষিপ্ত হয়ে আমার স্বামীর ওপর হামলা করে এবং তাকে কাঠ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় আমার শাশুড়ি ও জা (নাঈমের স্ত্রী) তাঁর ওপর হামলা চালায়। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তাকে উদ্ধার করে ঘরে নিয়ে আসি। পরে তাঁর মাথায় পানি দেই এবং ওষুধ সেবন করিয়ে তাকে ঘরে রেখে কাজে চলে যাই। বিকেলে কাজ থেকে বাড়িতে এলে আমার স্বামী জানায়, আমার প্রচণ্ড খারাপ লাগছে, আমাকে হাসপাতালে নাও। পরে আমার বড় ছেলেকে কল দিয়ে দ্রুত বাড়িতে আসতে বলি। ছেলে আসলেই স্বামীকে হাসপাতালে নিব মনে করেছিলাম। ছেলে বাসায় ফিরতে দেরি হওয়ায় আর তাকে হাসপাতালে নিতে পারিনি। সন্ধ্যার পরে আমার স্বামী মারা গেছে। আমার দেবর নাঈম আমার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যার বিচার চাই।’
নিহতের ছেলে সাকিব বলেন, ‘সকালে বাবার সঙ্গে আমার কাকার মারামারির খবর পেয়ে বাড়িতে এসে আমি নিজেও আঘাত পাই। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে আমি জুমার নামাজ পড়ে সুয়াগাজীতে আমার খালার বাসায় যাই। বাবার অবস্থা খারাপ শুনে সন্ধ্যায় বাড়িতে চলে আসি। এসে দেখি বাবা মারা গেছে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাঈম বলেন, ‘আমার মাকে মেরেছে শুনে আমি বাড়িতে এসে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে নাদিম ভাই আমার ওপর আক্রমণ করে। কাঠ দিয়ে পিটিয়ে সে আমার হাত ভেঙে ফেলে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করি। এ বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ দিতে যাই। এর মধ্যে শুনি আমার ভাই নিজ ঘরে মারা গেছে।’
চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা বলেন, খবর পেয়ে সুরতহাল শেষে নিহতের লাশ থানায় আনা হয়েছে। তার ডান পায়ের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য আজ শনিবার কুমিল্লায় পাঠানো হবে। রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।