সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে অক্সিজেন কম্প্রেশার অপারেটর হিসেবে ১৫ বছর যাবৎ কর্মরত মো. ওসমান (৩৯)। গতকাল বিস্ফোরণস্থলে কাজ করছিলেন তিনি। চোখের পলকে বিকট শব্দে সব তছনছ, আকাশে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী। তিনি ছিটকে পড়েন ১০ ফুট দূরে। পরে নিজেকে আবিষ্কার করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে।
আজ রোববার সকালে চমেকের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় আহত ওসমানের দুই পায়ের গোড়ালিতে লোহার ছোট টুকরা ঢুকে গেছে। বুকে-পিঠে জখম হয়েছে। বিকট শব্দে কান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কম শুনতে পারছেন।
সেখানে তাঁর সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার। ওসমান জানান, প্ল্যান্টটিতে অক্সিজেন তৈরি করা হয়। তারপর ৮০ কেজি ওজনের সিলিন্ডারে অক্সিজেন ভরা হয়। তাঁর দাবি, সিলিন্ডারে অতিরিক্ত চাপের কারণে এই বিস্ফোরণ হয়েছে।
ওই কারখানায় কাজ করতেন ফিলিংম্যান হিসেবে আব্দুল মোতালেব (৫৫)। তিনিও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই প্ল্যান্টে এ রকম ঘটনা আগে ঘটেনি। মূলত সিলিন্ডারে অতিরিক্ত চাপের কারণে এই বিস্ফোরণ হয়েছে বলে ধারণা করছি।’
গতকাল শনিবার বিকেলে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ছয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। এদের মধ্যে মো. মাসুদ ও প্রভেষ নামে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁরা চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। আহতদের বেশির ভাগই স্বাভাবিক কানে শুনতে পারছেন না।
রিপনের স্ত্রী সুবর্ণ কক্সি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিস্ফোরণের বিকট শব্দে তাঁর কান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাম কানে অল্প শুনতে পেলেও ডান কানে কিছু শুনতে পারছেন না।’
একই অবস্থা নওশাদ সেলিমেরও। তিনি অক্সিজেন প্ল্যান্টের প্রধান হিসাবরক্ষক (৫৫)। বিস্ফোরণের সময় তিনি ল্যাপটপে কাজ করছিলেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ল্যাপটপে কাজ করার সময় হঠাৎ ল্যাপটপটি জ্বলে ওঠে। বিস্ফোরণের পর অফিসে থাকা কাচ ভেঙে পড়ে। ভবন উড়ে যায়। এ সময় মাথায় ও মুখে আঘাতপ্রাপ্ত হই। পাশাপাশি কানেও কম শুনছি।’
২৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবাসিক চিকিৎসক মো. ফিরোজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিস্ফোরণের শব্দে অনেকের কানে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তবে আমরা এখন মেজর সমস্যাগুলো নিয়ে কাজ করছি।’