হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

সীতাকুণ্ডে প্রেমিকাকে বিয়ে করতে ব্যর্থ কিশোরের আত্মহত্যা

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 

আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২২: ২৩
শাহাদাত ইফাম। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে প্রেমিকাকে বিয়ে করতে ব্যর্থ হওয়ায় শাহাদাত ইফাম (১৭) নামের এক কিশোর আত্মহত্যা করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের পূর্ব মুরাদপুর উকিলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সে একই এলাকার রফিক উদ্দিনের ছেলে ও সীতাকুণ্ড সরকারি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।

পুলিশ জানিয়েছে, পাঁচ-ছয় মাস আগে মোবাইলে পৌর সদরের দক্ষিণ মহাদেবপুর (নলুয়া পাড়া) এলাকার দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোরীর সঙ্গে ইফামের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু কিশোরীর পরিবার আজ শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এক প্রবাসীর সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করে। বিষয়টি জানার পর ইফাম গতকাল প্রমিকাকে আত্মহত্যার ভয় দেখিয়ে বাড়ি থেকে বের করে নেয়।

পরে তারা বিয়ে করতে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে যায়। সেখানে যাওয়ার পর প্রেমিকের অগোচরে মেয়েটি তার বাবার মোবাইলে কল করে এবং নিজের ভুল স্বীকার করে তাকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে অনুরোধ করে। মেয়েটির ফোন পেয়ে তার বাবা দ্রুত আদালত প্রাঙ্গণে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে কিশোর ইফামকে বুঝিয়ে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন এবং মেয়েকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। কিন্তু প্রেমিকার ফিরে যাওয়ার বিষয়টি কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি কিশোর ইফাম। সে রাতে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে নিজ বসতঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে।

এ ঘটনার পর পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক বিষয়টি থানা-পুলিশকে অবহিত করলে মরদেহ নিয়ে যায়।

সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর সময় ছাত্র পরিচয়ে ১৫-২০ জনের একটি গ্রুপ থানায় এসে লাশ নিয়ে যেতে পুলিশকে চাপ দেয়। পরে আত্মহত্যাকারীর মা মরদেহ ময়নাতদন্ত করবেন না জানালে পুলিশ তাঁর জিম্মায় মরদেহ দিয়ে দেয়।

মেয়েটির বাবা বলেন, ‘ছেলে ও আমার মেয়ে একই শ্রেণিতে পড়ত। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক। বৃহস্পতিবার আত্মহত্যা করবে বলে আমার মেয়েকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চট্টগ্রাম আদালতে বিয়ের জন্য নিয়ে যায়। মেয়ে তার ভুল বুঝতে পেরে আদালত থেকে আমাকে ফোন করে। আমি আদালতে গিয়ে মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসি। ছেলেকে পৃথক গাড়িতে তাদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দিই। কিন্তু রাতে ছেলে নিজের বসতঘরে আত্মহত্যা করে।’

মেয়ের বাবা আরও বলেন, ‘থানা থেকে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স আমার বাড়িতে নিয়ে আসে অপরিচিত কিছু যুবক। এ সময় ওই যুবকেরা আমার ঘরে ঢুকে আসবাব ভাঙচুর করে। মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। প্রবাসীর সঙ্গে মেয়ে বিয়ের তারিখ নির্ধারিত ছিল শুক্রবার। কিন্তু বিয়ের খাবারের জন্য আনা ছাগল, মাছসহ খাদ্যসামগ্রী নিয়ে গেছে তারা। আমার ব্যবহৃত মোটরসাইলটিও রাখে নাই। দুর্বৃত্তদের ভয়ে এলাকাছাড়া হয়েছি। পরিবার নিয়ে এখন আত্মগোপনে আছি।’

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান আত্মহত্যার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আত্মহত্যা করা কিশোরের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠাতে চেয়েছিলেন। তবে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ পেতে পরিবার আবেদন করায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

পর্যটন মৌসুম শেষের পথে দেখা নেই বিশেষ ট্রেনের

রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে কলেরার প্রকোপ, দেওয়া হচ্ছে ভ্যাকসিন

বৈরী আবহাওয়া: চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারেনি তিনটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট