বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছেছে। বহির্নোঙরে অবস্থান নেওয়া এ জাহাজে থাকা ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা খালাসের অনুমতি রাতেই পাওয়া যেতে পারে। হামরিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে বার্থিংয়ের অনুমতি পাওয়ার পর রাতে কয়লা খালাস শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন জাহাজ মালিকপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম।
আজ রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় এমভি আবদুল্লাহ হামরিয়ার বহির্নোঙরে অবস্থান নেয়। সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে চলতে শুরু করা এ জাহাজ আজ নোঙর করল। জাহাজ কোম্পানির পক্ষ থেকে দুবাইয়ে নাবিকদের রিসিভ করবেন মেহেরুল করিম।
এদিকে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের দুজন উড়োজাহাজে করে দেশে ফিরবেন। বাকি ২১ নাবিক আসবেন জাহাজে। ওই নাবিকদের চট্টগ্রাম বন্দরে ফিরতে আরও অপেক্ষায় থাকতে হবে এক মাস। এমভি আবদুল্লাহ প্রথমে হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থান, জেটিতে বার্থিংয়ের পর কয়লা খালাস এবং সবশেষে আরেকটি ভাড়া ধরে সেই জাহাজেই ২১ নাবিককে ফিরতে হবে বলে জানিয়েছেন কোম্পানির মুখপাত্র মো. মিজানুল ইসলাম।
তথ্যমতে, ধীরলয়ে সোমালিয়ার সীমানা পার হওয়ার পর জাহাজটি সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ০৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছে। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। জাহাজটি ভেড়ার পর আল হামরিয়া বন্দরে চার থেকে পাঁচ দিন অবস্থান করবে বলে জাহাজ মালিকপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
জাহাজটি গত ১২ মার্চ বেলা ১২টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে। এরপর জাহাজ ও ২৩ নাবিককে জিম্মি করা হয়। জাহাজটি ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। জিম্মির পর ৩৩ দিন জলদস্যুদের কবজায় ছিল জাহাজসহ ২৩ নাবিক। মুক্তিপণ পরিশোধের পর গত ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা ৮ মিনিটে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ থেকে নেমে যায় জলদস্যুরা। এরপর জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দু’টি যুদ্ধজাহাজ পাহারা দিয়ে এমভি আবদুল্লাহকে জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রিত উপকূল থেকে সোমালিয়ার সীমানা পার করে দেয়।
২৩ নাবিকের মধ্যে রয়েছেন—এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ এবং ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, মো. নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো. আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, মো. সালেহ আহমদ, মো. শরিফুল ইসলাম ও মো. নুরুদ্দিন।
কয়লা খালাসের বিষয়ে জাহাজ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম বলেন, ‘আজকে সন্ধ্যার (দুবাই) পর জোয়ারের সময় বার্থিংয়ের অনুমতি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এরপর রাতেই কয়লা খালাস শুরুর বিষয়ে আমরা আশাবাদী।’