কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে বাংলাদেশি দুই জেলেকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। আজ বুধবার ভোররাতে ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় মো. ইলিয়াছ (৫০) নামের এক জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। বেঁচে ফিরেছেন অপর জেলে গোরা মিয়া (৩৫)।
জানা গেছে, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল নাফ নদীর অঁসড্ডিয়া নামক স্থানে মাছ শিকারের সময় এ ঘটনা ঘটে। মাছ শিকারে যাওয়া জেলেরা বালুখালীর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) চেকপোস্ট সংলগ্ন মৃত ছৈয়দ আহমদ ও মৃত মতিউর রহমানের ছেলে। ধারণা করা হচ্ছে, নিখোঁজ ইলিয়াছ গুলিবিদ্ধ হয়ে কোথাও রয়েছেন।
বেঁচে ফেরা গোরা মিয়া ও নিখোঁজ ইলিয়াছের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লম্বাবিল এলাকা থেকে জীবিকার তাগিদে নাফ নদীতে মাছ শিকারে যান তাঁরা। রাত ১১টার দিকে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এতে দুজন দু’দিকে পালিয়ে যায়।
গোরা মিয়া বলেন, ‘মিয়ানমার পুলিশ বেশ কিছুক্ষণ গুলি চালায়। প্রাণ বাঁচাতে আমি ভয়ে প্যারাবনে সারা রাত আত্মগোপনে থাকি। সকাল হলে কোনোরকমভাবে এলাকায় ফিরে আসি। ধারণা করছি, ইলিয়াছ গুলিবিদ্ধ হয়ে থাকতে পারেন।’
নিখোঁজ ইলিয়াছের ছেলে মো. তারেক বলেন, ‘দু’জনই মাছ শিকারে যান। একজন প্রাণ নিয়ে ফিরলেও আমার বাবা ফেরেননি। অনেকজন অনেক রকম কথা বলছে। কেউ বলছে, মরদেহ ভাসছে। আর কেউ বলছে, মরদেহ মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে রয়েছে।’
বাবাকে জীবিত ফিরে পাওয়ার আকুতি জানান তারেক। যদি জীবিত না হয় তাহলে মরদেহটি যেন অন্তত ফেরত পাওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক এসআই জায়েদ হাসান বলেন, দুই জেলে মাছ শিকারে গিয়ে ইলিয়াছ নামের এক জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে বিভিন্নভাবে শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জেনেই কাজ করছি।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে রোহিঙ্গা ও মাদক প্রবেশ বন্ধ করতে সাগরে মাছ শিকার বন্ধ রেখেছে সরকার। কিন্তু মাদকের চালান প্রবেশ থামেনি। নাফ নদী নির্ভর ১০ হাজারের বেশি জেলের মাছ শিকার বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে অনেকে গোপনে মাছ শিকারে যান। জেলেদের দাবি, মাদক আগের চেয়ে বেশি প্রবেশ করছে। অহেতুক জেলেদের কষ্ট দেওয়া হচ্ছে।