কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতে আবারও ভেসে এল বিশালাকৃতির মৃত তিমি। আজ মঙ্গলবার সৈকতের মেরিনড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি পয়েন্টে তিমিটি জোয়ারের পানিতে ভেসে আসে। তিমিটি সৈকততীর থেকে ২০০ থেকে ২৫০ মিটার দূরে সাগরে আটকে আছে।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসন, স্থানীয় পুলিশ, মৎস্য অধিদপ্তর, বন বিভাগ ও প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বুরি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, অন্তত এক সপ্তাহ আগে তিমিটি মারা পড়েছে। তিমিটির শরীরে বিভিন্ন অংশে পচন ধরায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সারওয়ার আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর বন বিভাগের ওয়াইল্ড লাইফ বিভাগকে জানানো হয়েছে। তিমিটি সমুদ্রতীরে না আসা পর্যন্ত কিছুই করা যাচ্ছে না।’
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. মাসুম বিল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিমির শরীর থেকে তীব্র গন্ধ ছড়াচ্ছে। দ্রুত তিমিটি মাটি চাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি ‘ব্রাইডস হোয়েল’ (Bride Whale) প্রজাতির বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ভেসে আসা তিমি দুটিও একই প্রজাতির ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘মৃত তিমির শরীরে জাল ও বয়া প্যাঁচানো রয়েছে। মাথায় আঘাতের চিহ্নও রয়েছে। তিমি সাধারণত মৎস্য শিকারিদের জালে আটকা পড়ে, জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে কিংবা সমুদ্র দূষণের কারণে পরস্পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দিগ্ভ্রান্ত হয়ে উপকূলের অগভীর জলে এসে আটকা পড়ে মারা যায়।’
সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটি খুব সংবেদনশীল। কখনো কখনো সঙ্গীর মৃত্যুতে এদের সাগরের অগভীর জলে আত্মাহুতি দিতেও দেখা যায়। তিমিটি এখনো সৈকততীরে না আসায় পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষণ ও নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। তবে সন্ধ্যা নাগাদ তিমিটি জোয়ারের পানিতে কূলে চলে আসতে পারে।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহ ভেসে আসছে। গত তিন মাসে ডলফিন, কচ্ছপ, জেলিফিশসহ নানা ধরনের প্রাণী মারা পড়ছে।