দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার দেবিদ্বারে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীতে যৌন হয়রানি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষককে তাঁর কক্ষে অবরুদ্ধ রেখে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন তাঁরা। রাত ৯টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ করছেন তাঁরা।
আজ বুধবার দেবিদ্বার উপজেলার মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা একটি সিএনজি ও বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষের কয়েকটি দরজা ভাঙচুর করেন।
পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে দেবিদ্বার-বিপাড়া (সার্কেল) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আমিরুল্লা, ওসি কমল কৃষ্ণ ধরসহ একদল পুলিশ উপস্থিত হয়ে ঘটনার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন।
পরে ওই ছাত্রী বাড়ি গিয়ে তার অভিভাবকদের ঘটনা জানালে তার বাবা স্কুলে আসেন। ঘটনা জানাজানি হলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কয়েক হাজার এলাকাবাসী স্কুল মাঠে প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে জুতার মালা ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
এদিকে সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টার দিকে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের উদ্ধার করে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা।
ওই ছাত্রীর বাবা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘দুপুরে আমার মেয়ে বাড়ি গিয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। তাকে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে প্রধান শিক্ষক তার যা যা করেছে তা বর্ণনা দেয়, যা আমি বাবা হয়ে বলতে পারছি না। স্কুলের প্রধান শিক্ষক যদি মেয়েদের নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে আমরা কোথায় যাব? আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মোক্তল হোসেন বলেন, ‘এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। মিথ্যে কলঙ্ক রটিয়ে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’
এ বিষয়ে দেবিদ্বার-বিপাড়া (সার্কেল) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আমিরুল্লা বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেও বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তাঁরা দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মোক্তল হোসেন বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে আছেন। ভুক্তভোগীর বাবা থানায় মামলা দিতে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’