কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের কলাবাগান এলাকার কাঁকড়ি নদীর পাড়ে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বস্তায় মোড়ানো এক জীবিত নবজাতককে পাওয়া যায়। আপাতত প্রশাসন কন্যাশিশুটির দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছে কাশিনগর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের শাখাওয়াত হোসেন সবুজ ও নাসরিন আক্তার দম্পত্তিকে। আর শিশুটিকে নিজেদের কাছে রাখতে পেরে খুশির শেষ নেই নিঃসন্তান এই দম্পতির।
স্থানীয় কলাবাগান তরুণ সংঘের সভাপতি মো. আবদুল মমিন বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্লাবের পেছনে কাঁকড়ি নদীর পাড়ে স্থানীয় লোকজন একটি বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়। পরে সেখানে বেশ কিছু লোক জড়ো হয়ে একটি সাদা বস্তা দেখতে পায়। বস্তার মুখ খুলে দেখে সদ্য ভূমিষ্ঠ একটি কন্যা নবজাতক। এলাকায় জানাজানি হলে অনেকে নবজাতকটিকে দত্তক নিতে চান। আমরা তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বিষয়টি জানাই। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বাচ্চাটিকে সেবাযত্নের জন্য স্থানীয় রামচন্দ্রপুর গ্রামের নিঃসন্তান দম্পতি শাখাওয়াত হোসেন সবুজ ও নাসরিন আক্তারের কাছে রাখা হয়।
শাখাওয়াত হোসেন সবুজ বলেন, ‘দীর্ঘ তিন বছরের বিবাহিত জীবনে আমাদের কোনো সন্তান নেই। আমরা নিঃসন্তান দম্পতি। আমি কুড়িয়ে পাওয়া নবজাতককে পেয়ে খুবই খুশি। আশা করি প্রশাসন নবজাতকটিকে আমার কাছেই আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করবে।’
শাখাওয়াত হোসেন সবুজের স্ত্রী নাসরিন আক্তার বলেন, ‘আল্লাহ আমার ওপর রহমত করেছে। আমি কুড়িয়ে পাওয়া রাজকন্যাটিকে যেন মানুষের মতো মানুষ করতে পারি।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ত্রিনাথ সাহা বলেন, ‘অস্থায়ীভাবে নবজাতটিকে শাখাওয়াত হোসেন সবুজ দম্পতির কাছে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্থায়ীভাবে নবজাতকটিকে ওই দম্পতির কাছে রাখা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি সমাজসেবা কর্মকর্তার মাধ্যমে বাচ্চাটির জন্য নতুন পোশাক কিনে সবুজ-নাসরিন দম্পতির বাড়িতে পাঠিয়েছি। ভবিষ্যতে যেন বাচ্চাটির কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য আইনি প্রক্রিয়া সম্পাদন করে তাঁদের কাছেই রাখার ব্যবস্থা করা হবে।’