নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভায় নবনির্মিত বাইপাস সড়কের ওপর গ্যাসের ছয়টি রাইজার রেখেই ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে। উদ্বোধনের আগেই ওই সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ায় অনেকে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন।
তবে সড়ক নির্মাণের আগে রাইজারগুলো সরিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় রাইজারগুলো সরানো সম্ভব হয়নি বলে জানায় বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
বসুরহাট বাজারে যানজট এড়ানোর জন্য এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাইপাসটি করা হয়েছে। দাগনভূঞা-বসুরহাট সড়কের বসুরহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে বসুরহাট-কবিরহাট সড়কের করালিয়া অংশে গিয়ে মিশেছে। এখানে আগে কোনো রাস্তা ছিল না। নতুন রাস্তা করার জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অধিগ্রহণ করা জমির অনেকাংশে মানুষের বাড়িঘরও ছিল। সেই সব বাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাসের সংযোগের জন্য বসানো ছিল ওই সব গ্যাস রাইজার।
গতকাল সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তাটির কাজ মোটামুটি শেষ হয়ে গেছে। এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। কিন্তু দুই মুখে কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকায় ছোট-বড় সব ধরনের গাড়ি ঢুকে পড়ছে এ রাস্তায়। মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা রাইজারগুলোর পাশে কোথাও কোথায় ছোট গাছের গুঁড়ি পুঁতে পথচারীদের ও যানবাহনকে সাবধান করার চেষ্টা করা হয়েছে। এর পাশ দিয়েই দ্রুতগতিতে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে। এই সড়কে এখন পর্যন্ত কোনো সড়কবাতিও লাগানো হয়নি। রাতের অন্ধকারে মাঝ রাস্তায় গ্যাস রাইজার ভারী যানবানের চাপে পড়ে বিস্ফোরণ ঘটে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নূর হোসেন ফরহাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সওজ ও বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিকে বিষয়টি বারবার জানিয়েছি। সওজ দুষছে বাখরাবাদকে আর বাখরাবাদ দুষছে সওজকে। বাস্তবে তারা কেউ দায়িত্বশীল আচরণ না করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় যান চলাচল শুরু হওয়ায় যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।’
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি সিদ্দিকুর রহমান ভুট্টু বলেন, ‘গ্যাস রাইজার তুলে নেওয়ার জন্য বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সঙ্গে বারবার লিখিতভাবে ও সরাসরি যোগাযোগ করা হলেও তারা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। অপরদিকে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে আমাদের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তাই মাঝখানে চার ফুট করে জায়গা খালি রেখে ঢালাই দিতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ রাইজার সরিয়ে নিলে আমরা পরে এসে এ কাজটুকু শেষ করব।’
সওজের নোয়াখালী উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক থেকে রাইজার সরিয়ে নিতে আমরা বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির নোয়াখালী শাখাকে বেশ কয়েকবার চিঠি দিয়েছি। তবু সময়মতো তারা রাইজারগুলো সরিয়ে নেয়নি।’
যোগাযোগ করা হলে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির নোয়াখালী অফিসের রাজস্ব ও হিসাব শাখার (মাইজদী) সহকারী কর্মকর্তা মো. আসগার হোসাইন বলেন, ‘রাইজার সরিয়ে নিতে অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন। যা সড়ক বিভাগ আমাদের দেওয়ার কথা। কিন্তু তারা কোনো অর্থ বরাদ্দ না দেওয়ায় তা সরানো হয়নি।’