চট্টগ্রাম নগরীতে পরিবারের অগোচরে যুবকের সঙ্গে প্রেম করে ছয় মাস আগে বিয়ে করেছিলেন রিনা আক্তার (২৫)। এই ঈদে স্বামীকে নিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি বেড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হলো না তাঁর।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরীর বন্দর থানার কলসী দীঘি সড়কের হাজি মাহমুদ মিয়া কলোনির ভাড়া বাসার তালা ভেঙে তাঁর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশের ধারণা, তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যার পর স্বামী পালিয়েছেন। আজ বুধবার এই ঘটনায় নিহতের বাবা মো. আবু সিদ্দিক বাদী হয়ে রিনা আক্তারের স্বামী সাখাওয়াত হোসেনকে একমাত্র আসামি করে বন্দর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। নিহত গৃহবধূ চট্টগ্রামে আনোয়ারা উপজেলার পূর্ব গহিরা গ্রামের মৃত নূর আহাম্মদের মেয়ে।
রিনা চট্টগ্রাম নগরীর কেইপিজেডে জিএমএস কারখানায় কর্মরত ছিলেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত সাখাওয়াত হোসেন ময়মনসিংহ জেলার মহেলাকান্দা ইউনিয়নে মুচডেঙ্গা গ্রামে মকবুল হোসেনের ছেলে। চট্টগ্রাম নগরীতে এই দম্পতি হাজি মাহমুদ মিয়া কলোনিতে ভাড়া থাকতেন।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্থানীয়দের খবর পেয়ে পুলিশ দরজার তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। পরে ঘরে বিছানার ওপর চাদর দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ওই নারীর মরদেহ উদ্ধারের পর চমেক হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক রয়েছে। তাঁকে ধরতে পারলে সবকিছু জানা যাবে। তাঁকে ধরার জন্য সব ধরনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ওসি আরও বলেন, ‘ওই গৃহবধূর স্বামী সাখাওয়াতের পেশা এখনো আমরা জানতে পারিনি। ছয় মাস আগে পরিবারের অগোচরে তাঁরা বিয়ে করেছিলেন। নিহতের পরিবারের লোকজনও সাখাওয়াতের বিষয়ে তেমন কিছু জানেন না।’
মামলার এজাহারে আবু সিদ্দিক উল্লেখ করেন, ঈদ উপলক্ষে রিনা স্বামীর বাড়ি ময়মনসিংহে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ২৪ এপ্রিল তাঁরা ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রামে ফিরে আসেন। পরদিন ২৫ এপ্রিল রিনার পরিবারের লোকজন মোবাইল ফোনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাননি। তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এজাহারে বলা হয়, এর আগে ২৪ এপ্রিল বেলা ২টা ২০ মিনিটে সাখাওয়াত ফোন করেন রিনার পরিবারের এক সদস্যকে। ফোন করে রিনা গলায় ফাঁস দিয়েছেন বলে জানান। ওই দিন সকালে দুজনেরই সঙ্গে রিনার পরিবারের লোকজন ফোনে কথা বলার কারণে তাঁরা বিষয়টিকে ঠাট্টা মনে করে গুরুত্ব দেননি।
আবু সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিয়ের পর শুধু রোজার সময় একবারই তাঁরা স্বামী-স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। এই ঈদেও তাদের বাড়িতে আসার কথা ছিল। রিনার স্বামী কী করত, সেটা আমি জানি না।’