নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়া ও তাঁর স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সাক্ষী হাজির না হওয়ায় তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক মো. আলী হুসাইন তারিখ পিছিয়ে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর আদালতে সাক্ষ্য দেন। এই সাক্ষীর মাধ্যমে পাপিয়া দম্পতির মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। এ পর্যন্ত ১২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এর আগে ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
২০২১ সালের ৪ আগস্ট দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থার উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় পাপিয়ার বিরুদ্ধে মোট ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুম ভাড়া নেন পাপিয়া। তিনি নগদে মোট ৩ কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকা বিল পরিশোধ করেন। ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার কেনাকাটা করেন পাপিয়া। এসব অর্থের কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি তিনি।
এ ছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাসা ভাড়া ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগ ১ কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে বিনিয়োগ ২০ লাখ টাকা এবং বিভিন্ন ব্যাংকে নিজের ও স্বামীর নামে জমা রাখা ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি দুদকের অনুসন্ধানে।
অন্যদিকে র্যাবের অভিযানে তাঁর বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের ২২ লাখ টাকা দামের গাড়ি জব্দ করা হয়। এরও কোনো বৈধ উৎস মেলেনি দুদকের অনুসন্ধানে।
এভাবে পাপিয়া দম্পতির মোট ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায়। এসব অর্থের বৈধ উৎসের দালিলিক প্রমাণ না পাওয়ায় পাপিয়া এবং তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের সময় শামিমা নূর পাপিয়াসহ চারজনকে আটক করে র্যাব-১।