বনজঙ্গল থেকে গাদিলাপাতা সংগ্রহের পর তা প্রক্রিয়াজাত করেন নারীরা। এরপর পাইকারদের কাছে তা বিক্রি করে সংসারে বাড়তি উপার্জন করছেন তাঁরা। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি পরিবারের এখন প্রধান আয়ের উৎস হস্তশিল্পপণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত এই গাদিলাপাতা।
গাদিলাপাতা সংগ্রহের পর প্রক্রিয়াজাত করে তা হস্তশিল্পপণ্য তৈরিতে ব্যবহারের উপযোগী করা হয়। এই পাতা সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজের প্রতিটি পর্যায়ে জড়িত থাকেন গ্রামের নারীরাই।
এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের কাইচ্চাবাড়ি, বেড়াবাড়িসহ কয়েকটি গ্রামের নারীরা বনজঙ্গল থেকে গাদিলাপাতা সংগ্রহ করে এনে সেগুলো বিশেষ পদ্ধতিতে বাড়িতে সেদ্ধ করে রোদে শুকাচ্ছেন। বাড়ির পাশে বিশেষ ধরনের মাচা তৈরি করে সুতায় সারি সারি গাঁথার পর শুকাতে দিচ্ছেন। একটু পরপর পাতাগুলো উল্টিয়ে-পাল্টিয়ে শুকানোর কাজ করছেন নারীরা।
কাইচ্চাবাড়ি গ্রামের রিনা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে নাশতা খেয়ে বের হই গাদিলাপাতা সংগ্রহ করতে। একসঙ্গে দল বেঁধে কয়েকজন মিলে গভীর বনের ভেতর যেতে হয়। এরপর যে যার মতো করে গাদিলাপাতার গাছ খুঁজে পাতা সংগ্রহ করি। এখন বনের ভেতর আগের মতো গাদিলাপাতার গাছ পাওয়া যায় না। তাই অনেক কষ্ট করে পাতা সংগ্রহ করতে হয়।’
বেড়াবাড়ি গ্রামের নাছিমা বেগম বলেন, স্বামীর পাশাপাশি পরিবারের বাড়তি উপার্জনের জন্য বসে না থেকে প্রতিবেশী নারীদের সঙ্গে বনজঙ্গলে যান গাদিলাপাতা সংগ্রহ করতে। তারপর সেগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে পাইকারি বিক্রি করেন। শুকানোর পর পাইকারদের ফোন করলে চট্টগ্রাম থেকে পাইকার এসে মাপজোখ করে কিনে নিয়ে যান। প্রতি মণ শুকনো গাদিলাপাতা বিক্রি হয় ২ হাজার টাকায়। এক সপ্তাহে তাঁরা তিন-চার মণ পাতা বিক্রি করে থাকেন। তাতে কিছু হলেও বাড়তি উপার্জন হয় সংসারের। সেই টাকা দিয়ে পরিবারের ছোট ছোট চাহিদা পূরণ করাসহ ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছে।