রাজধানীর মতিঝিলে শিল্পী নামে ১১ বছর বয়সী শিশু গৃহকর্মীকে হত্যার দায়ে দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ (বিশেষ দায়রা জজ আদালত)-এর বিচারক মো. ইকবাল হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন গৃহকর্তা নজরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী রাবেয়া আক্তার। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাভোগের আদেশ দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় স্বামী-স্ত্রী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানাসহ তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত রায়ে উল্লেখ করেন, নির্যাতনের কারণে শিশু গৃহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। একই সঙ্গে আসামি দম্পতি তার ওপর নির্যাতন করেছিলেন এটাও সাক্ষীগণ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন বলে আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শিল্পী উত্তর কমলাপুর কবি জসিম উদ্দিন রোডের মতিঝিল থানাধীন এলাকায় সাজাপ্রাপ্ত দম্পতির বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করত। ২০০৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমের মা অজ্ঞাত ফোন কলের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, তাঁর মেয়ে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। সংবাদ পাওয়ার পর তিনি হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পান, তার মেয়ে গুরুতর জখম অবস্থায় সেখানে ভর্তি। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, আসামিরা তার মেয়েকে ঘরের দরজা আটকিয়ে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত করেন। এর আগে, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ও মেয়েকে আঘাত করা হতো বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার তিন দিন পর মারা যায় শিল্পী। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সিরাজুল ইসলাম মতিঝিল থানায় মামলা করেন।
একই বছরের ৩০ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মতিঝিল থানার এসআই গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম। পরের বছরের ২৬ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
বিচার চলাকালে ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালতে ছয়জন সাক্ষ্য দেন।