নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র মো. হাবিবুল হাসান অন্তর হত্যা মামলায় তিন আসামিকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগম এ নির্দেশ দেন। একই দিনে আরেকজন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
যে তিনজনকে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়, তাঁরা হলেন মনছুর, শাহাদত হোসেন ওরফে আশিক ও শাহিন হোসেন। তিনজনই সাভারের আকরাইন ও খাগান গ্রামের বাসিন্দা।
এ মামলায় আত্মসমর্পণের পর আসামি সিফাতকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন একই আদালত। আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
৪ জানুয়ারি চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার এসআই দিদার হোসেন তিন আসামির প্রত্যেককে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। ওই আবেদনের ওপর আজ শুনানির দিন ধার্য ছিল। তিন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
এই তিন আসামি গত ২ ডিসেম্বর ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর বিচারক এ এইচ এম হাবিবুর রহমান আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আজ আসামিদের পক্ষে রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানিতে অংশ নেন সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান। বাদীপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহানুর, সীমা আক্তার, সেঁজুতি ঘোষ, মো. মাইনুদ্দীন, গাজী হাসান মাহমুদ, কাজল রায় প্রমুখ।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত বছর ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাভারের ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি পাশে খাগান বাজারের লেগুনা স্ট্যান্ড থেকে ড্যাফোডিলের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র হাসিবুল হাসান অন্তরকে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা ধরে নিয়ে যায়। খাগান গ্রামের বউবাজারের পাশে একটি বাগানে নিয়ে তার হাত-পা বেঁধে লোহার রড ও লাঠিসোঁটা দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। অন্তরকে মারাত্মক আহত অবস্থায় বাগানের মধ্যে ফেলে রেখে দুর্বৃত্তরা চলে যায়।
স্থানীয়রা অন্তরকে উদ্ধার করে প্রথমে পাশের রাজু হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। গ্রামের থেকে অন্তরের অভিভাবকেরা এসে তাঁকে ২ নভেম্বর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই দিন বেলা ৩টার সময় অন্তর মারা যান।
অন্তরের মৃত্যুর খবর ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে পৌঁছানোর পর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এলাকায় ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। ওই বিক্ষোভে ব্যাপক ভাঙচুর হয় ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আশপাশে সংঘর্ষ হয়। একসময় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে গত বছর ২ নভেম্বর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সহকারী অধ্যাপক ও ডেপুটি প্রক্টর মো. বদরুজ্জামান বাদী হয়ে সাভার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় স্থানীয় রাহাত সরকার, মনছুর, আশিক, শাহিন, টুটুল ও সিফাত এবং সাত-আটজন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়।