কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বান্ধবীর বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকার চুরির অভিযোগে এক তরুণীসহ তাঁর স্বামী ও প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চুরি করা স্বর্ণালংকার বিক্রি করে স্বামীকে একটি আইফোন কিনে দেন ওই তরুণী। পাশাপাশি প্রেমিককেও চুরি করা স্বর্ণের চেইন দেন।
গতকাল মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আজ বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—ভৈরব পৌর শহরের জগন্নাথপুর আওয়াল কান্দা এলাকার ইব্রাহিম মিয়ার মেয়ে সুমাইয়া বেগম (১৮), তাঁর স্বামী রুহান মিয়া (২০) এবং পৌর শহরের দক্ষিণপাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া রাসেল মিয়ার ছেলে, সুমাইয়ার প্রেমিক ঘোড়াকান্দা এলাকার মৃত আবেদ আলীর ছেলে আক্তার হোসেন (১৯)।
পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুমাইয়া ২৫ জানুয়ারি বান্ধবী নিধীর বাড়িতে বেড়াতে যান। এ সময় নিধীর খালা বান্টি বেগমের ঘরে প্রবেশ করে সুমাইয়া ৬ ভরি ১১ আনা স্বর্ণালংকার চুরি করেন। পরে সেই স্বর্ণ বিক্রি করে স্বামীকে একটি আইফোন কিনে দেন এবং নিজেও একটি স্মার্টফোন নেন। পাশাপাশি প্রেমিক আক্তার হোসেনকেও চোরাই স্বর্ণের একটি অংশ দেন।
স্বর্ণালংকার চুরির বিষয়টি বুঝতে পেরে নিধীর খালা বান্টি বেগম ২৫ জানুয়ারি ভৈরব থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
ভৈরব থানা পুলিশ তদন্তের অংশ হিসেবে নিউ টাউন এলাকার বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এবং মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে পৌর শহরের দক্ষিণপাড়া ও ঘোড়াকান্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সুমাইয়া, তাঁর স্বামী রুহান এবং প্রেমিক আক্তার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সুমাইয়া চুরির কথা স্বীকার করেন এবং তার দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ বাকি দুই অভিযুক্তকেও গ্রেপ্তার করে। আক্তার হোসেনের কাছ থেকে ১৪ আনা ওজনের স্বর্ণালংকার এবং সুমাইয়ার কাছ থেকে কিছু টাকা উদ্ধার করা হয়।
বান্টি বেগম বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে এক সময় ভাড়া থাকতো সুমাইয়া ও তার পরিবার। সেই সুবাদে আমাদের সঙ্গে তাদের ভালো সম্পর্ক ছিল। ২৫ জানুয়ারি আমার বড় বোনের মেয়ে নিধীর বান্ধবী হিসেবে সুমাইয়া আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। সে সময় আমি ও মা ঘরে ছিলাম না। সে সুযোগে আমার ঘরের আলমারি থেকে ৬ ভরি ১১ আনা স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধার ও অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে থানায় অভিযোগ করি।’
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, ‘সুমাইয়া এক সময় নিধির খালার বাসায় ভাড়া থাকতেন। সেই পরিচয়ের সুবাদে নিধীর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সুমাইয়া তাঁর স্বামী ও প্রেমিককে নিয়ে বান্ধবীর বাসায় যায় এবং বাসার সদস্যদের অনুপস্থিতির সুযোগে চুরির ঘটনা ঘটায়। এর মধ্যে প্রেমিক আক্তারের কাছ থেকে ১৪ আনা স্বর্ণালংকার এবং সুমাইয়ার কাছ থেকে কিছু টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাদের কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’