রাজধানীর ছয় থানার পৃথক আট মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, গোপালগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ঝালকাঠি-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান ওমরসহ ৯ জনকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুর রহমান গ্রেপ্তার দেখানোর পৃথক পৃথক আদেশ দেন।
অন্যরা হলেন—তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিটু, সাবেক সিনিয়র সচিব মহিবুল হক ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। শুনানির আগে আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে তাঁদের আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই মিরপুর-১৩-এর নিউ মডেল কলেজের সামনে রাব্বি মাতবর হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আনিসুল হক, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও জিয়াউল আহসানকে; ২৩ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় নাসির হোসেন হত্যা মামলায় আনিসুল হককে; ২০১৫ সালে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় মেয়র নির্বাচনের প্রচারণার সময়ে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় সাবেক মন্ত্রী ফারুক খানকে; ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনে পারভেজ মিয়া হত্যা মামলায় শমসের মবিনকে; রাজধানীর বনানী থানাধীন মহাখালী কাঁচাবাজার এলাকায় গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলায় শাহজাহান ওমরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় ৫ আগস্ট আল আমিন হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিটুকে; নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় সাবেক সচিব মহিবুল হক ও পিপলস পার্টির বাবুল সরদার চাখারীকে; রাজধানীর কাফরুল থানাধীন পুলিশ স্টাফ কলেজের বিপরীতে ৫ আগস্ট আব্দুল হান্নান হত্যা মামলায় চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন তারিখে গ্রেপ্তার দেখানো এই মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সরকারি আমলা, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের আটক করা হয়। পরে তাঁদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
তদন্ত কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনে উল্লেখ করেছেন, সংশ্লিষ্ট মামলার ঘটনার সঙ্গে আসামিরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন। মামলার তদন্তের স্বার্থে ভবিষ্যতে প্রত্যেককে রিমান্ডে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে বলেও তদন্ত কর্মকর্তা আবেদনে উল্লেখ করেছেন।