মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালীপূজা উদ্যাপিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নের ইছামতী নদীর তীরে ঐতিহ্যবাহী শেখরনগর কালীমন্দির প্রাঙ্গণে চলছে মেলা। এতে দেশ-বিদেশ থেকে আসা কালীদেবীর ভক্তদের ঢল নেমেছে।
শেখরনগর কালীমন্দিরের পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি রতন চন্দ্র দাস বলেন, ‘কালীপূজা ও এ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত মেলায় লাখো ভক্তের সমাগম হয়েছে। আজ বুধবার ভোর ৫টা থেকে কালীমন্দিরে পাঁঠা বলি শুরু হয়। এ বছর তিন হাজারের বেশি পাঁঠা বলি দেওয়া হয়েছে।’
কালীমন্দিরের কর্তৃপক্ষ জানায়, গত শনিবার থেকে কালীমন্দির প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কালীদেবীর ভক্তরা আসেন। এ ছাড়া ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল থেকে সাধু-সন্ন্যাসীরা আসায় মিলনমেলায় পরিণত হয়। মূল পূজা গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়। আজ বুধবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে পাঠা বলিদান করা হয়। পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। আগামীকাল বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মন্দির প্রাঙ্গণে বিশেষ আরতি নৃত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা জানান, ৯০১ বাংলা সন থেকে শেখরনগর কালীমন্দিরে কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কালীদেবীর ভক্তরা আসেন এখানে। পূজা উপলক্ষে ইছামতীর পাড়ে বসে বড় মেলা। শেখরনগর ঋষি সমিতির উদ্যোগে এবারের মেলায় শতাধিক স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এখানে অন্য ধর্মের মানুষেরও সমাগম হয়। মেলায় শিশুদের জন্য রয়েছে নাগরদোলা, হর্স রেস ও রেলভ্রমণের ব্যবস্থা। পাওয়া যায় গৃহস্থালি কাজের রকমারি জিনিসপত্র।
শেখরনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দেবব্রত সরকার টুটুল বলেন, ‘৫০০ বছরের বেশি পুরোনো এই মেলা এই অঞ্চলের ঐতিহ্য বহন করে। একদিনের পূজা হলেও মেলা চলে প্রায় সপ্তাহখানেক। পূজাকে কেন্দ্র করে সব ধর্মের মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী শেখরনগর কালীমন্দিরে মূল পূজা সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এতে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এই পূজাকে ঘিরে পোশাক (ইউনিফর্ম) পরা ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন।’