হোম > সারা দেশ > ঢাকা

ঘরের আড়ায় ঝুলছিলেন মা, বিছানায় দুই শিশুসন্তানের লাশ

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে দুই শিশুসন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর মা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আজ রোববার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মা ও দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের চর ইসলামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ, সহকারী সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান রিফাত, সিরাজদিখান থানার ওসি মো. মুজাহিদুল ইসলাম, কেয়াইন ইউপির চেয়ারম্যান মো. আশ্রাফ আলী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

মৃতরা হলেন মা সালমা বেগম (৩৩) এবং এক ছেলে ও এক মেয়ে। সালমা সৌদিপ্রবাসী অলি উল্লার স্ত্রী এবং কেরানীগঞ্জের দড়িগাঁও গ্রামের বাচ্চু মিয়ার মেয়ে। সালমার ছেলে তাওহীদ (৭) এবং মেয়ে সাইমুনা (১০)। শিশু দুটি চর সোনাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল।

স্বজনেরা জানান, সালমা বেগম বিভিন্ন এনজিও থেকে প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণের কিস্তি শোধ করতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। কোনো কূলকিনারা না পেয়ে সালমা সন্তানদের নিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেরানীগঞ্জের সোনাকান্দা গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে প্রবাসী অলি উল্লাহ প্রায় আট বছর আগে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে রেখে সৌদি আরবে যান। বিভিন্ন এনজিও ও মহাজনের কাছ থেকে পাঁচ-সাত লাখ টাকা ঋণ করে বিদেশ যান তিনি। বিদেশে গিয়ে তেমন সুবিধা করতে না পারায় বাড়তে থাকে ঋণের বোঝা।

ঋণের জন্য বাড়িতে এসে প্রায় চাপ দিতে থাকেন এনজিওকর্মীরা। আত্মহত্যার আগের দিন শনিবার রাতে একাধিক এনজিওকর্মী বাড়ি এসে শাসিয়ে যান এবং পরদিন (রোববার) এসে টাকা নিয়ে যাবেন বলে হুমকি দেন তাঁরা। 

সালমার ভাশুর (স্বামীর বড় ভাই) তারা মিয়া বলেন, ‘গত রাতে কিস্তির জন্য চাপ দিয়ে যাওয়া এনজিওকর্মীরা রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাড়ি এসে সালমাকে ডাকাডাকি শুরু করে। এ সময় বাড়ির স্বজনেরা ঘুম থেকে উঠে দরজায় কান পেতে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে জানালা দিয়ে ছেলে-মেয়ের নিথর দেহ ও মায়ের ঝুলন্ত লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয়।’ এ সময় লাশের পাশে বিষের বোতল ও তিন-চার পাতা ঘুমের ট্যাবলেট পাওয়া যায় বলেও জানান তারা মিয়া। 

সালমা বেগমের জা (ভাশুরের স্ত্রী) রোজিনা আক্তার বলেন, ‘সালমা ঋণগ্রস্ত ছিল, বিভিন্ন সময় পপি, এসএস, পেইজ ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, সাজেদা, শক্তিসহ বেশ কয়েকটি এনজিও থেকে এবং এলাকার লোকদের কাছ থেকে বহু টাকা সুদে নিয়েছিল। এনজিওকর্মী ও সুদের কারবারিদের চাপে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’ এ সময় শাশুড়ি সবুজা বেগম বিলাপ করে বলতে থাকেন, ‘তুই মরবি মর, আমার নায়-নাতি কেন মারলি!’ 

তবে এলাকাবাসী বলছে, ঋণের পাশাপাশি পারিবারিকভাবেও চাপে ছিলেন সালমা। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি আত্মহত্যার কথা জানাচ্ছিলেন প্রতিবেশীদের। কিন্তু কেউ গুরুত্ব দেননি। ঋণ নিয়ে স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজনের মধ্যে মাঝে মাঝেই ঝামেলা হতো। এমনকি আত্মহত্যার রাতেও বাড়িতে প্রচুর ঝগড়াঝাঁটি হয়েছে বলে জানান এক প্রতিবেশী নারী। 

এ ব্যাপারে সহকারী সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান রিফাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুই শিশুসন্তানসহ মায়ের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ঋণের চাপে দুই শিশু সন্তানসহ মা আত্মহত্যা করেছেন।’

হাদি হত্যা মামলা: ফয়সালের স্ত্রীসহ তিনজন ফের রিমান্ডে

র‍্যাকের সভাপতি শাফি, সাধারণ সম্পাদক তাবারুল

রিমান্ড শেষে কারাগারে সাংবাদিক আনিস আলমগীর

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম ইনকিলাব মঞ্চের

উত্তরায় ট্রাকচাপায় শিশুর মৃত্যু, মা-ভাইসহ আহত ৩

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

হাদির জানাজা ঘিরে যান চলাচল নিয়ে ডিএমপির নির্দেশনা