বাসস, ঢাকা
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, অটিস্টিক মানুষের প্রতিভার সর্বোচ্চ ব্যবহার ও সমাজে তাঁদের পূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি গতকাল তিনি এ কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, করোনাকালীন শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা বিঘ্নিত হওয়ার ফলে সারা বিশ্বে অটিজমের শিকার শিশুরা সামঞ্জস্যহীনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশে বিদ্যমান সামাজিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা, শক্তিশালী তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো এবং বিস্তৃত কমিউনিটি-ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা অনেক পরিবারকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করেছে।
গত এক দশকে বাংলাদেশে অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অটিজমের শিকার ব্যক্তিবর্গ ও তাঁদের পরিবার যে সব চ্যালেঞ্জ ও সামাজিক বঞ্চনা মোকাবিলা করছে তা প্রশমিত ও দূর করতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংশ্লিষ্ট অংশীজন একসঙ্গে কাজ করছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ এবং নিউরো-ডেভেলপমেন্ট প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন ২০১৩ প্রণয়নসহ প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক ব্যক্তিবর্গের সুরক্ষায় গৃহীত বিভিন্ন সরকারি পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, জাতীয় প্রচেষ্টার পাশাপাশি জাতিসংঘের উদ্যোগে ২০০৭ সালে শুরু হওয়া বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসসহ অটিজম সংক্রান্ত পদক্ষেপসমূহে বাংলাদেশ তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশ ২০১৩ সালে ‘অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার, নিউরোডেভলপমেন্ট ডিসঅর্ডারসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিবন্ধিতার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের আর্থসামাজিক চাহিদার সমাধান করা’ শীর্ষক সাধারণ-পরিষদ রেজুলেশন-৬৭ / ৮২ জাতিসংঘে পেশ করে, যা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। বাংলাদেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সকল শিশুকে তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ ও অন্বেষণের মাধ্যমে মূলধারায় আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় অটিজম বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অটিজম বিষয়ক শুভেচ্ছা দূত সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের অসাধারণ ভূমিকার প্রশংসা করেন।
জাতিসংঘের বাংলাদেশ ও কাতার স্থায়ী মিশন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অটিজম স্পিক্সস্ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কাতারের সামাজিক উন্নয়ন ও পরিবার মন্ত্রী মরিয়ম বিনতে আলী বিন নাসার আল-মিসনাদ এবং বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অটিজম বিষয়ক বিশেষজ্ঞগণ অংশগ্রহণ করেন।