নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও ৩০ বছরই আমরা গণতন্ত্রের দেখা পাইনি। স্বৈরশাসক আমাদের নিপীড়ন করেছে, শৃঙ্খলিত করেছে। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরে এক দুই বছরের মধ্যেই যাদের হাতে বাংলাদেশ ধর্ষিত হয়েছে, বাংলাদেশ লাঞ্ছিত হয়েছে তাদের গাড়িতে পতাকা দেখেছি। ফলে সেই ৩০ বছর স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক কিছু, অনেক ইতিহাস, অনেক সত্য ছিল ট্যাবু।
আজ রোববার বিকেলে বাংলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন পুলিশ প্রধান (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ’ শীর্ষক গ্রন্থের পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইজিপি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল তৎকালীন পুলিশ। ২৫ মার্চ রাতের সেই প্রতিরোধের সঙ্গে যুক্ত অনেকের বীরত্বগাথা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে বইটিতে। এসব নিয়ে কথা বলত গিয়ে সমগ্র মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের অবদান নিয়ে কথা বলেন পুলিশ প্রধান। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পুলিশের অনেক সংযোগ ছিল। ছায়া সহচর ছিল পুলিশ। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা সংগ্রামে পুলিশ একাত্ম ছিল। যত দিন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে কথা হবে তত দিন পুলিশের বীরত্বের বিষয় প্রকাশিত হবে।’
আইজিপি বলেন, ‘রাজারবাগে প্রতিনিয়ত ঝগড়া হতো বাঙালি অবাঙালি পুলিশের মধ্যে। বাঙালি পুলিশ সব সময় বঞ্চনা উপলব্ধি করেছে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধিকার আন্দোলনে শুরু থেকে একাত্ম ছিল পুলিশ। কারণ সরকারি চাকরি সূত্রে বাঙালি পুলিশ বঞ্চনাটা কী তা বুঝতে পারত।’
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’ বইটির সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আস্থা-বিশ্বাস খুবই বেশি ছিল পুলিশের ওপর। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার যে ঘোষণা, তা প্রথম প্রতিপালন করেছে পুলিশ। প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ করেছে পুলিশই।’
বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে ও পাঞ্জেরী পাবলিকেশনসের সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন—কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী, র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) কামরুল আহসান প্রমুখ।