ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী বাসে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আরেকজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল শনিবার বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দুজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নওরিন করিম।
আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়া দুজন হচ্ছেন শরীয়তপুরের জাজিরার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো. ইসমাইল মোল্লার ছেলে মো. সবুজ (৩০) এবং ঢাকার সাভারের টানগেন্ডা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মো. শরীফুজ্জামান শরীফ (২৮)। আর রিমান্ডে নেওয়া আসামি হলেন মানিকগঞ্জের দৌলতপুর সদরের লাউতারা গ্রামের শহিদুল ইসলাম মুহিত (৩০)।
আসামি সবুজ ও শরীফ স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, রিমান্ডে থাকা মুহিত এবং তাঁরা দুজন ছাড়াও ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় আরও চারজন জড়িত। বাসে ডাকাতির সময় দুই নারী যাত্রীর কাছ থেকে বিভিন্ন অলংকার ছিনিয়ে নেওয়ার সময় তাঁদের শ্লীলতাহানি করেন তাঁরা।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, রিমান্ডে থাকা শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিতের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানায় ১টি ও ঢাকা জেলার সাভারে ১টি বাস ডাকাতিসহ ৫টি মামলা রয়েছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডের তথ্য নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) আহসানুজ্জামান বলেন, শহিদুল ইসলাম মুহিতের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ডই মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে ঢাকার সাভার থেকে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন, একটি ছুরি ও ২৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
এ ছাড়া এই ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনা সৃষ্টি হলে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে মির্জাপুর থানার ডিউটি অফিসার এএসআই আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জানান, মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তরিত হয়েছে। পুলিশের সব কটি সংস্থা সম্মিলিতভাবে তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছে।
গত সোমবার মধ্যরাতে একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়ে। দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাসটি নিয়ন্ত্রণে নেন ডাকাতরা। তিন ঘণ্টা ধরে বাসটি বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে যাত্রীদের টাকাপয়সা ও মালামাল কেড়ে নেওয়া হয়। এ সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানিও করা হয়। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তবে ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট এলাকা থানা ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাটি অস্বীকার ও এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ঘটনার তিন দিন পর গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওমর আলী নামের এক যাত্রী মির্জাপুর থানায় মামলা করেন।