মাহিদুল ইসলাম মাহি, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ)
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ট্যানারির বর্জ্য উচ্ছিষ্ট পশুর চামড়া পুড়িয়ে কয়েলের কাঁচামাল তৈরি করা হচ্ছে। এর ধোঁয়া ও দুর্গন্ধে নাকাল এলাকাবাসী। একই সঙ্গে এটি স্বাস্থ্যঝুঁকিতেও ফেলছে তাঁদের। উপজেলার ধূলসুড়া ইউনিয়নের আইলকুণ্ডি গ্রামের ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে কয়েলে ব্যবহৃত কাঁচামাল তৈরির এ উন্মুক্ত কারখানা।
সরেজমিনে ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আনা ১০ জন শ্রমিক প্রায় দুই মাস ধরে কাজ করছেন কারখানাটিতে। তবে এর মালিকের নাম তাঁরা জানেন না। শ্রমিকেরা জানান, বলড়া ইউনিয়নের কোকরহাটি এলাকার লোকমান হোসেন কারখানাটির যাবতীয় তদারকির দায়িত্বে আছেন। তিনি বলড়া ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য ছবুরা বেগমের স্বামী।
সাভারের ট্যানারির বর্জ্য পুড়িয়ে কাঁচামাল তৈরি করা হচ্ছে কারখানাটিতে। পলিথিন, ছেঁড়া কাপড়, কাগজ ব্যবহার করা হয় এই চামড়া পোড়ানোর জ্বালানি হিসেবে। উন্মুক্ত জমিতে এসব পশুর চামড়া পোড়ানোর সময় সৃষ্টি হওয়া ধোঁয়া ও দুর্গন্ধে নাকাল এলাকাবাসী।
আইলকুণ্ডি গ্রামের তোতা মিয়া বলেন, দিনে কম চামড়া পোড়ায় তাই গন্ধ কম। তয় সন্ধ্যার পর থেকে বাড়ি-ঘরে থাকা দুষ্কর।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ সদস্য রুবেল হোসেন বলেন, এসব পচা চামড়া পোড়ানোর দুর্গন্ধে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। আশপাশের বাড়িতেও বসবাস করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। চামড়া পোড়ানোর সময় নিশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হয়। অতিদ্রুত এই কারখানা বন্ধ করা না হলে এলাকায় বসবাস করা কষ্ট হয়ে যাবে।
ধুলশুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জায়েদ খান বলেন, ‘বিষয়টি আমি কয়েক দিন আগে শুনলেও ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় দৌড়াদৌড়ি করায় খোঁজ নিতে পারিনি। আজই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেহেরুবা পান্নার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ট্যানারির বর্জ্য পোড়ানোর মতো ঘটনা ঘটলে তাতে অবশ্যই স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। এটি পোড়ানোর কারণে বায়ুদূষণও ঘটছে।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহরিয়ার রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মাধ্যমেই জানতে পারলাম। অতিদ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’