ঢামেক প্রতিনিধি
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় চিকিৎসাধীন আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম বিনা রানী চক্রবর্তী (৪০)। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দুজন মারা গেল।
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মৃত্যু হয় তাঁর। বিনার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. তরিকুল ইসলাম।
তরিকুল ইসলাম জানান, বিনা রানীর শরীরের ৮৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। গত সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান বিনা রানীর মা উমা রানী। বর্তমানে উমা রানীর ছেলে দেবা চক্রবর্তী (২৮) ও নাতি পিনাক চক্রবর্তী (১৫) ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছে।
এর আগে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কুন্ডা ইউনিয়নের কাউটাইল ঋষিপাড়া এলাকার একটি চারতলা বাড়ির নিচ তলায় গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ ঘটে।
এতে দগ্ধ হন উমা রানী চক্রবর্তী (৬০), তাঁর মেয়ে বিনা রানী চক্রবর্তী (৪০), ছেলে দেবা চক্রবর্তী (২৮) ও নাতি পিনাক চক্রবর্তী (১৫)।
আর বিস্ফোরণে দেয়ালের ইটের আঘাতে আহত হন পথচারী ঝালমুড়ি বিক্রেতা স্বপন রাজবংশী (৫৫) ও প্রতিবেশী লিপি চক্রবর্তী (৩০)।
ঘটনার পর উমা রানীর নাতনি জ্যোতি দাস জানান, ৪ তলা বাড়িটি তাদের নিজেদের। নিচতলায় থাকেন ওমা রানী এবং তার ছেলে ও মেয়ের পরিবার। সকালে উমা রানি রান্নার জন্য রান্নাঘরে যান। সেখানে গিয়ে দেশলাই জ্বালাতে বিকট বিস্ফোরণ হয়। আর বাসার দেয়াল কিছু অংশ ভেঙে পড়ে যায়। ঘটনার আঁচ পেয়ে তারা দগ্ধদেরকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসেন।
তবে ঘটনার দিন রাতে মৃত বিনা রানীর ভাই সঞ্জয় চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, তার ছোট ভাই দেবা চক্রবর্তী মাদকাসক্ত। প্রায়ই টাকার জন্য পরিবারের লোকজনকে মারধর করত। এমনকি বাবা-মাকে মারধর করছে। সোমবার মাদকের টাকার জন্য বাড়ির লোকজনকে ঘরে আটকে রেখে গ্যাস সিলিন্ডারের চাবি খুলে দিয়ে এরপর আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে দেবাসহ দগ্ধ হন তাদের মা, বোন ও সঞ্জয়ের ছেলে পিনাক।
এদিকে বাকি দুজনকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহত লিপি চক্রবর্তীর ছোট ভাই সৌরভ আচার্য জানান, লিপির বাসা ওই বাড়ির পাশেই। সকালে যখন বাড়িটিতে বিস্ফোরণ হয় তখন সেখান থেকে দেয়ালের ইট এসে লিপির মাথায় লাগে।
আর স্বপন রাজবংশী পেশায় ঝালমুড়ি বিক্রেতা। থাকেন ওই এলাকাতেই। সকালে ওই বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে বাজারে যাচ্ছিলেন। তখন বিস্ফোরণে ইট এবং সাটার ভেঙে এসে তার মাথায় পড়ে।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. তরিকুল ইসলাম আরও জানান, দগ্ধ দেবা চক্রবর্তীর শরীরের ১৬ শতাংশ ও পিনাক চক্রবর্তীর ২৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। পাশাপাশি তাদের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। তাদের সবার অবস্থায়ই আশঙ্কাজনক।