চট্টগ্রামের জিপিও এলাকায় কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের ৩ হাজার ৯০০ শতাংশ সরকারি সম্পত্তি নিয়ে রুল জারি করা হয়েছে। ইরাফান সরকারসহ স্থানীয় দুই ব্যক্তির করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না— তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে ওই সম্পত্তি রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না— তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। আর রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই সম্পত্তির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আদালত।
এই মামলার রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অমিত দাশ গুপ্ত। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ২০০১ এর বিধান অনুসারে চূড়ান্ত। হাইকোর্ট রুল দিয়ে বলেছেন, তাঁরা বিষয়টি দেখতে চান।
রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুনতাসীর উদ্দিন আহমেদ। তিনি আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১৯৬৫ সাল থেকেই এটি সরকারি সম্পত্তি। প্রথমে এনিমি প্রপার্টি (শত্রু সম্পত্তি) ছিল। পরে তা ভেস্টেড প্রপার্টি হয়। ৩ হাজার ৯০০ শতাংশ ওই সম্পত্তি সরকারের দখলে ছিল, এখনো আছে। আলবার্ট সরকারের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তিনি প্রতারণা করে চট্টগ্রামে গিয়ে জমি আত্মসাতের চেষ্টা করছেন আদালতের মাধ্যমে। নিয়ম হলো সরকারের পক্ষ থেকে রিট করার। তাদের চিঠি দিয়ে জানানোর পরও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’
মুনতাসীর উদ্দিন আরও বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না— তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না— তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। আর রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই সম্পত্তির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করা হয়েছে।’
এর আগে ওই সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টার ঘটনায় স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটিশ শাসনামলে ডেভিড ইজিক্যাল নামে এক ইহুদি ব্যবসায়ী চট্টগ্রামে ১৮৮১ সালে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করেন। ১৯৬৫ সালে পুরো পরিবার নিয়ে লন্ডনে চলে যান তিনি। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক ব্যক্তি আলবার্ট সেজে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে সরকারের দখলে থাকা এসব সম্পত্তি আদালতের মাধ্যমে নিজের নামে নেন।’