মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ রিফাতের (৩১) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে মা নিলুফা আক্তার খানমের কান্না থামানোই যাচ্ছে না। পাড়া-প্রতিবেশীরাও তাঁর আহাজারিতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জে শহরের পশ্চিম দাশড়া পৌরভূমি অফিসের সামনে গোল্ডেন টাওয়ারে সাততলার বাড়িতে এ দৃশ্য দেখা যায়।
জাওয়াদের মা নিলুফা আক্তার খানম বিলাপ করছেন আর বলছেন, ‘আমার ছেলে প্রতিদিন সকালে ফোন করে। কিন্তু আজ এখন পর্যন্ত ফোন করেনি। কখন আসবে জাওয়াদের ফোন।’ এই আহাজারি কোনোভাবে সামাল দিতে পারছেন না প্রতিবেশী আত্মীয়রা।
মা নিলুফা আক্তার আহাজারি করছেন আর বলছেন, ‘আমি আছি অথচ আমার ছেলে নাই এটা কেমন কথা। আমারে মাটি দিব আমার ছেলে। আর এহন আমারে দিতে হইবো তাকে মাটি।’
জাওয়াদের খালাতো ভাই মশিউর রহমান শিমুল জানান, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমিতে (বাফা) যোগদান করেন জাওয়াদ। ২০১১ সালে বিমানবাহিনীতে অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন ।
শিমুল আরও জানান, জাওয়াদের ছয় বছরের এক কন্যাসন্তান ও এক বছর বয়সী এক ছেলেসন্তান রয়েছে। স্ত্রী রিফাত অন্তরাসহ চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় থাকেন তাঁরা।
প্রতিবেশী মামা সুরুজ খান বলেন, ‘জাওয়াদ খুব ভালো ছেলে। ঈদের মধ্যে বাসায় এসে দেখা করেছেন। জাওয়াদ চলে যাওয়ায় দেশ একজন প্রশিক্ষিত সৈনিক হারিয়েছে।’
নিহত জাওয়াদের বড় মামা সুরুজ খান জানান, অত্যন্ত মেধাবী ছিল জাওয়াদ। স্কুল ও কলেজজীবনে সব সময় প্রথম হয়েছে। ছোটবেলা থেকে জাওয়াদের স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার। কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ হয়ে পাইলটও হয়েছিল। কিন্তু সেটি ছিল মাত্র অল্প সময়ের জন্য। পরিবারের মাথায় বাজ নেমে পড়েছে জাওয়াদকে হারিয়ে।’ আগামীকাল শুক্রবার জাওয়াদের মরদেহ মানিকগঞ্জে আনা হবে বলে জানান তিনি।