নাশকতার চার মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ২৮ নেতা কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। খালাস দেওয়া হয়েছে ২০ আসামিকে। আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভিন্ন ভিন্ন বিচারক এই সব রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে দুই একজন ছাড়া সবাই পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তারা গ্রেপ্তার হওয়ার পর এই রায় কার্যকর হবে।
অন্যদিকে বিভিন্ন আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, আসামিদের মধ্যে ইতিপূর্বে কেউ মৃত্যুবরণ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে এই রায় কার্যকর হবে না।
কোতোয়ালি থানার মামলায় ৯ জনের কারাদণ্ড:
রাজধানীর কোতোয়াল থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির ও এর অঙ্গ সংগঠনের নয় নেতা কর্মীকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন আবু তাহের, পারভেজ আলম, রজব আলী পিন্টু, সাখাওয়াত হোসেন রিয়াজ আহমেদ রিয়াজ, ইমরান হোসেন, শওকত, নবকুমার দত্ত ও আরিফ হোসেন বাপ্পি।
মামলায় দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হয় তাদেরকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার আসামিরা সবাই পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানার জিন্দাবাদ এলাকায় অবৈধ সমাবেশ করে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা গাড়ি ভাঙচুরসহ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটায়। পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের অপর হামলা করে তাদের জখম করে। ওইদিনই পুলিশ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করে।
গুলশান থানার মামলায় ১২ জনের কারাদণ্ড:
২০১৮ সালে গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় ১২ জনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এই কারাদণ্ড দেন। দেড় বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন শাহজাহান কবীর, শরিফুল ইসলাম, তোফায়েল, কামাল হোসেন, মীর স্বপন, ওয়াহিদুল ইসলাম, মামুন চৌধুরী, আব্দুল জলিল, রফিকুল ইসলাম ও মো. জয়নাল।
এক বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন আকরাম ও সিদ্দিকুর রহমান। এই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ১০ আসামি পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোনা জারি করা হয়েছে। এই মামলায় সাতজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গুলশান থানা এলাকার প্রগতি সরণীর শাহজাদপুর কনফিডেন্স সেন্টারের সামনে বিএনপি নেতা কর্মীরা বেআইনি সমাবেশ করে। এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় ওইদিন পুলিশ বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করে।
নিউমার্কেট থানার মামলায় ১০ জন খালাস:
২০১৩ সালে নিউ মার্কেট থানায় দায়ের করা একটি নাশকতার মামলায় বিএনপির ১০ নেতা কর্মীকে খালাস দেওয়া হয়েছে। ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন এই রায় দেন।
২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর নিউ মার্কেটের সামনে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি ১০ নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এই মামলায় আট জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। আদালত রায়ে বলেছেন সাক্ষীরা ঘটনা সন্দেহাতিভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হননি।
কদমতলী মামলায় সাতজনের কারাদণ্ড:
২০১৩ সালে রাজধানীর কদমতলী থানায় দায়ের করা এক মামলায় বিএনপির স্থানীয় নেতা শরীয়তুল্লাহসহ সাত জনকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন এই রায় দেন। এই মামলায় এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। ২০১৩ সালের ৬ নভেম্বর কদমতলী থানা এলাকায় এই নাশকতার মামলাটি দায়ের করা হয়।