বহুল আলোচিত মডেল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসাকে মাদকের তিন মামলায় আট দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত পৃথক পৃথক আদেশে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গুলশান থানায় দায়ের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পিয়াসাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এর আগে গত ২ আগস্ট তাঁকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।
ওই মামলায় পিয়াসাকে আরও ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পিয়াসাকে ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর বারিধারা এলাকার বাসা থেকে মডেল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসাকে গত ১ আগস্ট রাত ১০টার দিকে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়।
এ সময় পিয়াসার ঘরের টেবিল থেকে চার প্যাকেট ইয়াবা জব্দ করা হয়। প্যাকেটে ছিল মোট ৬০০ পিচ ইয়াবা। এছাড়াও পিয়াসার রান্নাঘরের ক্যাবিনেট থেকে নয় বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। অভিযানের একপর্যায়ে পিয়াসার ফ্রিজ খুলে একটি আইসক্রিমের বাক্স থেকে সিসা তৈরির কাঁচামাল ও বেশ কয়েকটি ই-সিগারেট পাওয়া যায়।
আরও দুই মামলায় পিয়াসার ছয় দিন রিমান্ড: এদিকে রাজধানীর ভাটারা থানা ও খিলক্ষেত থানায় দায়ের করা আরও দুই মামলায় তিন দিন করে মোট ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন একই আদালত। ভাটারা থানায় দায়ের করা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পিয়াসার পক্ষে জামিনের আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং তিন দিন রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন। খিলক্ষেত থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় সাত দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তিন দিন মঞ্জুর করেন। এর আগে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত খিলখেত ও ভাটারা থানার মামলায় পিয়াসাকে গ্রেপ্তার দেখান।
গত ৪ আগস্ট বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে পিয়াসার সহযোগী মিশুকে আটক করা হয়। মিশুর কাছ থেকে সাত হাজার ২০০ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় ভাটারা থানায় মিশুর বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। ওই মামলায় পিয়াসাকে আসামি করা হয়। সেই মামলায় আজ রিমান্ডে নেওয়া হলো।
অন্যদিকে মিশুর সঙ্গে গ্রেপ্তার জিসানকে নিয়ে খিলক্ষেত এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও ছয় হাজার ১০০ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায়ও পিয়াসাকে আসামি করা হয়।
পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, পিয়াসা ও মৌ মূলত একই সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। আর মিশু ও জিসান তাদের অন্যতম সহযোগী। মডেলিংয়ের নামে তারা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। এরপর পার্টি করার নাম করে তাদের বাসায় ডেকে নিতেন। সেখানে মদ-ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক খাইয়ে ‘আপত্তিকর’ ছবি তুলতেন। পরে সেগুলো দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে টাকা বা নানা সুবিধা আদায় করতেন।