গাজীপুরের শ্রীপুরে এক পোশাকশ্রমিককে মারধরের প্রতিবাদে সহকর্মীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। আজ শনিবার বেলা ১টার দিকে এক্সিস নিটওয়্যারস লিমিটেড নামের কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক মাওনা ইউনিয়নের উত্তরপাড়ায় মহাসড়কে অবস্থান নেন। এতে করে সড়কের দুই পাশে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট, মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠে।
শ্রমিকেরা মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত কারখানা সুপারভাইজার আল আমিনকে চাকরিচ্যুতসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবি না মানলে সড়ক ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
কারখানার কাটিং সেকশনের শ্রমিক আজিজুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে কারখানার সুপারভাইজার আল আমিন আমাদের ফ্লোরে এসে সহকর্মী মোশাররফ হোসেনকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। তাকে সজোরে লাথি মেরে মেশিনের ওপর ফেলে দেন। এতে মোশাররফের শরীরের বিভিন্ন স্থান মারাত্মকভাবে কেটে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ে। আমরা সবাই মিলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। এ ঘটনায় কারখানার সব শ্রমিক ক্ষিপ্ত হয়ে রাস্তা নেমে আসেন।’
আরেক শ্রমিক মোহাম্মদ ইসাহাক বলেন, ‘অভিযুক্ত আল আমিনকে চাকরিচ্যুত করতে হবে। আমাদের ১২ দফা দাবি মানতে হবে। ১২ দফা দাবি না মানলে আমরা সড়ক ছাড়ব না।’
এ নিয়ে কথা হলে কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা হাসেম করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারখানার ভেতর একটি অপ্রীতিকর ঘটনার পরপরই আমরা শ্রমিকদের ডেকে বিচারের আশ্বাস দিই। কিন্তু শ্রমিকেরা আশ্বাস না মেনে রাস্তায় চলে যায়। আমরা কারখানার পক্ষ থেকে আহত শ্রমিকের সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু শ্রমিকেরা হঠাৎ করে অনেক দাবিদাওয়া নিয়ে সড়কে অবস্থান নিয়েছে। আমরা বেতন-ভাতা সব সময় নিয়মিত পরিশোধ করি। আজ যে দাবিগুলো করা হচ্ছে এগুলো হঠাৎ করে তাদের করা। আমরা পুলিশ-সেনাবাহিনীকে খবর দিয়েছি।’
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী। মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’
পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর আশ্বাসে শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে থাকে।