শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
নিজের বাড়িতে পানি সরবরাহ করতে নলকূপ (সাবমারসিবল পাম্প) বসানোর জন্য ফুটপাত দখল করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সাবেক এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। নলকূপ খননের সময় ফুটপাত দখলমুক্ত করেছে প্রশাসন। আজ রোববার দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তায় এই ঘটনা ঘটে।
ফুটপাতে পানির পাম্প বসানোর কাজে জড়িত কাউকে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। তবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠলে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানায় প্রশাসন। সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) বলছে, বিষয়টি নজরে এলে জোরালো ব্যবস্থা নিয়েছে তারা।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, মাওনা চৌরাস্তায় ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্ব পাশের ফুটপাত ভেঙে সেখানে বাসাবাড়ির ব্যক্তিগত পানির পাম্প স্থাপন করাচ্ছিলেন পুলিশের সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আবদুল কাদির। এ সময় ফুটপাত বন্ধ রেখে নলকূপ খননের কাজ চলে। এতে পথচারীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে। সৃষ্টি হয় কাদাপানির দুর্ভোগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, পুলিশ কর্মকর্তার এমন অবৈধ কাজ হচ্ছে জেনেও স্থানীয় প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছিল না? বিভিন্নভাবে তাদের জানানো হলেও সবাই বিষয়টি এড়িয়ে যান। তাতে ফুটপাত ভেঙে নলকূপ খনন শুরু করেন পুলিশ কর্মকর্তার নিয়োজিত শ্রমিকেরা।
স্থানীয় বাসিন্দা আল আমিন বলেন, ‘মহাসড়কের জায়গা (ফুটপাত) দখল করে বসানো হচ্ছে সাবমারসিবল পাম্প। এমন গুরুতর অভিযোগেও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া অন্যায়কে সম্মতি আর প্রশ্রয় দেওয়া হলে যে কেউ সুবিধামতো সরকারি জায়গা দখলে নামবে।’
অভিযোগের বিষয়ে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাদির বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব বহুতল ভবনের পানির মোটর (সাবমারসিবল পাম্প) নষ্ট হওয়াতে বিকল্প পানির ব্যবস্থা জরুরি হয়ে পড়ে। ভবনের অবশিষ্ট নিজস্ব কোনো জায়গা না থাকায় এই ফুটপাতে বোরিং করেছি। আমরা বোরিং শেষে দ্রুত ফুটপাত ব্যবহার উপযোগী করে দিতাম। ফুটপাত দখলের কোনো চিন্তা ছিল না। কাজ শেষে ফুটপাত ঢালাই করে দেওয়া হতো।’
ফুটপাত দখল করে পানির পাম্প বসানোর কাজ বেআইনি কিনা? এমন প্রশ্নে
সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা কোনো উত্তর দেননি।
গাজীপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি নজরে আসতেই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফুটপাত দখল করে ব্যক্তিগত পানির পাম্প স্থাপন কাজ অভিযান চালিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। ভাঙা ফুটপাত সিমেন্টের ঢালাই দিয়ে ঠিক করা হয়েছে।’ তবে এই ঘটনায় জড়িত কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।