নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাত পেরোলেই বাংলা নতুন বছর শুরু। ১৪৩১ সালকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত আপামর বাঙালি। প্রতিবারের মতো এবারও রমনার বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনে থাকছে বর্ষবরণ। তারই চূড়ান্ত মহড়া হলো আজ শনিবার চৈত্রসংক্রান্তিতে।
সরেজমিন দেখা যায়, নতুন বছরকে আমন্ত্রণ জানাতে রমনার ঐতিহাসিক বটমূলে প্রস্তুত করা হয়েছে মূলমঞ্চ। নতুন বছরের শুরুতে ছায়ানটের শিল্পীরা বর্ষবরণের প্রভাতি অনুষ্ঠানে গাইবেন। কাল রোববার ভোরে রমনার বটমূলে বরাবরের মতো ছায়ানটের আয়োজনে বৈশাখকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। আজ সকাল ১০টা থেকে তারই প্রস্তুতি শুরু হয়।
১৭০ জন শিল্পী মঞ্চে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে মহড়া করেছেন। মূলত শব্দ ব্যবস্থাপনা, কারিগরি ব্যবস্থা এবং মঞ্চের সঙ্গে শিল্পীদের অভ্যস্ত করাই ছিল আজকের এই মহড়ার মূল উদ্দেশ্য। তৈরি করা হয়েছে একসঙ্গে সব শিল্পীর বসার মতো করে মঞ্চ। বসানো হয়েছে পাটাতন। বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে নির্দিষ্ট সীমানা।
ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছি। আমাদের শিল্পী-কলাকুশলীরা এখন নববর্ষের অনুষ্ঠানে কাজগুলো ঠিক করে নিচ্ছেন। এবারের নববর্ষের প্রথম প্রভাতে আমরা মানুষের জয়গান করব।’
ছায়ানটের যুগ্ম সম্পাদক জয়ন্ত রায় জানান, এবার আয়োজনে সম্মেলক গান থাকবে ১১টি, একক গান থাকবে ১৫টি। পাশাপাশি পাঠ ও আবৃত্তি থাকবে।
ছায়ানট জানিয়েছে, আগামীকাল ভোরে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ৩৫টি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে শিল্পীরা। ভোরের আলো ফুটতেই আহীর ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে এবারের নতুন বছরে আহ্বান শুরু হবে। পুরো অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে।
উল্লেখ্য, ষাটের দশকে রমনার বটমূলে পয়লা বৈশাখের সূর্যোদয়ে সংগীতের আয়োজন করেছিল সাংস্কৃতিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছায়ানট। সেটি ছিল মৌলবাদের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ। সেই অনুষ্ঠানই মূলত বাংলা নববর্ষ বরণের সাংস্কৃতিক উৎসবকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রেরণা জুগিয়েছে।