ঢামেক প্রতিবেদক
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাক্প্রতিবন্ধী সহোদর দুই বোনকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী শিশুদের শারীরিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে যাত্রাবাড়ী গোলাপবাগ এলাকার একটি বাসায় এই ঘটনা ঘটে।
এ দিকে ধর্ষণের অভিযোগে রেজাউল করিম (৬০) নামে এক অটোরিকশা চালককে ধরে পুলিশে দিয়েছে প্রতিবেশীরা। পরে মামলার প্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী শিশুদের মা বলেন, তিনি ওই এলাকায় রাস্তায় পিঠা বিক্রি করেন এবং তার স্বামী খিচুড়ি বিক্রি করেন। ঘটনার সময় তাঁরা দুজনই কাজে ছিলেন। শিশু দুজন বাড়িতে ছিল। বুধবার একই ভবনের নিচতলার ভাড়াটিয়া রেজাউল করিম তাঁদের বাসায় ঢুকে দুই মেয়েকে ধর্ষণ করে। পরে তার শিশু সন্তানদের ডাক চিৎকারে প্রথমে প্রতিবেশীরা এগিয়ে যায়। এ সময় ঘরে ঢুকে রেজাউলকে নগ্ন অবস্থায় দেখতে পায় প্রতিবেশীরা। তখন তাঁকে আটক করে পুলিশের খবর দেয় তারা। পরে লোক মারফত খবর পেয়ে তারা স্বামী-স্ত্রী বাসায় ছুটে যান। বাসায় গিয়ে দুই মেয়েকে উদ্ধার করে রাত পৌনে ১টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
ভুক্তভোগী শিশুদের মা আরও বলেন, তাঁরা বাড়িটির তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। তাদের তিন মেয়ে। বড় মেয়ের বয়স ১৬ এবং মেজো মেয়ের বয়স ৮। তারা দুজনই বাক প্রতিবন্ধী। এ ছাড়া ছোট মেয়েটি সুস্থ। অভিযুক্ত রেজাউল আগে তৃতীয় তলায় তাদের পাশের ফ্ল্যাটে থাকতেন।
শিশুদের মায়ের অভিযোগ করে বলেন, রেজাউলের চলাফেরা এবং কথাবার্তা সন্দেহজনক হওয়ায় বাড়িওয়ালার মাধ্যমে তাঁকে সরিয়ে বাড়ির নিচ তলার ফ্ল্যাটে দেন। এরপরও বাসা ফাঁকা পেলে রেজাউল বিভিন্ন অজুহাতে তাঁদের বাসায় যেতেন।
এ দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়কারী ডা. সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘গতকাল বুধবার মধ্যরাতে শিশু দুটিকে পুলিশের মাধ্যমে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আজকে তাদের বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। এখনো রেজাল্ট আসেনি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে-তারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। শিশুরা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তারা খুবই ভয় পাচ্ছে। নিয়মিত তাদেরকে কাউন্সেলিং করাতে হবে।’
এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জসীম উদ্দীন বলেন, রেজাউল করিম নামে ওই ব্যক্তি শিশু দুটিকে ধর্ষণ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। স্থানীয় লোকজনই আটকের পর তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার একটি মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলায় রেজাউলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’