ইউটিউবে ব্যাংকের এটিম বুথ ডাকাতির ভিডিও দেখে রাজধানীর শাহজাদপুরের মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথ ডাকাতি করতে যান আরিফুল ইসলাম (২৭)। সে সময় ওই বুথের নিরাপত্তাকর্মী হাসান মাহমুদকে (৬০) নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যার পর এটিএম বুথের ভেতরে রাখা টাকা বের করতে হাতুড়িসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি ব্যবহার করেও বুথের বাক্স ভাঙতে পারেনি। পরে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান তিনি।
গত ১০ এপ্রিল এই ঘটনার চার দিন পর হত্যা মামলার প্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আরিফুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শাহজাদপুরের কালাচাঁদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি, এটিএম বুথ ভাঙার কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ি, ছেনি, শাবলসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়ে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, ‘গত ১০ এপ্রিল আনুমানিক ভোর ৫টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে গুলশান থানা এলাকার শাহজাদপুর প্রগতি স্মরণীয় মাইশা চৌধুরী টাওয়ারে অবস্থিত মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথে কর্মরত নিরাপত্তাকর্মী হাসান মাহমুদকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে নিহতের ভাই মাহফুজুর রহমান রুমেল গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।’
গ্রেপ্তার আরিফুলকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, ‘আরিফ অন্তত ১০ বছর ধরে বিভিন্ন অফিস ও বাসা-বাড়ির আসবাবপত্র পরিবহনের কাজ করত। তিন বছর আগে সে তাঁর বন্ধু-বান্ধবের পরামর্শে ওই ব্যবসার পাশাপাশি ইট, বালি, পাথর সরবরাহের ব্যবসা শুরু করে। ওই ব্যবসায় লোকসান হওয়ার কারণে প্রায় লাখ টাকা দেনায় পড়ে সে। একপর্যায়ে সে তার একটি কিডনি বিক্রির চেষ্টা করে মিরপুর এলাকায় লিফলেট ছাড়ে। কিন্তু কিডনি বিক্রি করতে না পারায় এবং পাওনাদারদের দেনা পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদারেরা তাঁর বাসায় গিয়ে তাকে খুঁজতে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাওনাদারদের চাপে ও ভয়ে সে গত কয়েক মাস মাস ধরে পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে থাকে এবং কীভাবে টাকা পরিশোধ করতে পারবে সেই পরিকল্পনা করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় সে এটিএম বুথ লুট করার উদ্দেশে অত্যন্ত পাশবিক কায়দায় নির্মমভাবে বুথের নিরাপত্তাকর্মীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।’
গ্রেপ্তার আরিফুলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।