গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার চালা বাজারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে হঠাৎ করে মো. কবির নামে এক যুবককে টানাহেঁচড়া করে মোটরসাইকেলে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন চার ব্যক্তি। তখন যুবকের চিৎকারে তৎপর হয়ে ওঠেন স্থানীয় লোকজন। সন্দেহ হলে চারজনকে আটক করেন তাঁরা। পরিচয়ের সপক্ষে চার ব্যক্তি প্রমাণ দিতে পারেননি। পরে তাদের পুলিশে তুলে দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে দুজন র্যাবের সদস্য রয়েছেন বলে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম লুৎফুল কবির আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে কাপাসিয়া থানার পুলিশ তুলে নেওয়া ব্যক্তি এবং ওই চারজনকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে থানায় একটি দ্রুত বিচার আইনে মামলা করা হয়। র্যাব সদস্যদের তাঁদের বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিদের আগামীকাল শনিবার আদালতে পাঠানো হবে।
আটককৃতরা হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার ঢোলভাঙ্গা গ্রামের মো. তারেক (২৬), নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার তেলটুপি গ্রামের মো. নাদিম হোসেন (২৫), গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার লতাপাতা গ্রামের হাবিবুর রহমান (২৮) ও উপজেলার দস্যু নারায়ণপুর গ্রামের রবিউল (৩০)। এর মধ্যে মো. তারেক ও মো. নাদিম হোসেন র্যাব সদস্য। ডিবি পরিচয়ে মো. কবিরকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। কবিরের বাড়ি ঘাগুটিয়া গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে চার ব্যক্তি বাজারে প্রবেশ করেন। তাঁরা বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে একটি টং দোকানে বসে থাকা অবস্থায় কবির নামে এক যুবককে হঠাৎ ঝাপটে ধরে ফেলেন। এরপর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে একটি মোটরসাইকেলে তোলার চেষ্টা করেন ওই চারজন। একপর্যায়ে মোটরসাইকেলে তুলে বাজার থেকে বের হচ্ছিলেন তাঁরা। এ সময় কবির চিৎকার দিয়ে তাঁকে রক্ষার জন্য সড়কের আশপাশের লোকজনকে অনুরোধ করতে থাকেন। তার চিৎকারে বাজারের লোকজন জড়ো হয়ে ওই চারজনকে থামান।
পরিচয় জানতে চাওয়া হলে তাঁদের মধ্যে একজন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য, দুজন র্যাব সদস্য, অপরজন ডিবি পুলিশের সদস্য বলে পরিচয় দেন। মুখে এসব পরিচয় দিলেও তারা প্রমাণ হিসেবে কোনো পরিচয়পত্র দেখাতে পারেননি। সন্দেহ হলে ওই চারজনকে আটক করে পুলিশে তুলে দেন স্থানীয় জনতা।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, আটক ব্যক্তিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দেন। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে পারেননি। এর মধ্যে দুজন র্যাবের সদস্য রয়েছেন। বাহিনীর দুজন সদস্যকে তাদের ডিপার্টমেন্টের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা হয়েছে। আরেকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে কবির নামের ব্যক্তি এলাকায় মাদক ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত।