রাজবাড়ীর পাংশায় চাঁদা না দেওয়ায় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরুদ্ধে ৫ বাড়িতে হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। হামলাকারীরা স্থানীয় বিকাশ দাদার লোকজন। এ ঘটনায় মো. মনিরুল ইসলাম (৩৫) নামের এক গ্রামপুলিশ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
গতকাল শনিবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের বসাকুষ্টিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে রয়েছেন ইউনিয়নবাসী।
গুলিবিদ্ধ গ্রাম পুলিশ মো. মনিরুল ইসলাম বসাকুষ্টিয়া গ্রামের কলম শেখের ছেলে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আজ রোববার সকালে সরেজমিনে জানা যায়, গত বুধবার রাত ১০টার দিকে মুখে গামছা পেচানো অবস্থায় ৮-১০ লোক বসাকুষ্টিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের রেজাউল প্রামাণিকের বাড়িতে প্রবেশ করে। তাঁরা স্থানীয় বিকাশ দাদার লোক পরিচয় দিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। দুই দিনের মধ্যে টাকা না দিলে এবং বিষয়টি কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেয়। কিন্তু রেজাউল বিষয়টি আত্মীয়স্বজন ও গ্রামপুলিশ মনিরুল ইসলামকে জানান। এরপর গত রাতে এই হামলা, গুলিবর্ষণ ও মারপিটের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার রাতে (শনিবার) প্রথমে রেজাউল প্রামাণিকের বসতঘরের দরজায় গুলি করে। পরে রেজাউলের চাচা আরশেদ প্রামাণিকের বাড়িতে হামলা করে। এরপর এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য কামাল শেখের বাড়িতে গুলিবর্ষণ ও হামলা করে। এরপর রাজ্জাক শেখ ও মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে হামলা ও গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা।
এই পাঁচজনের বাড়িতে হামলার পরপরই গ্রাম পুলিশ মো. মনিরুল ইসলামকে নিজ বাড়ির বসতঘরের বারান্দায় গুলি করে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।
মনিরুল ইসলামের স্ত্রী ইতি খাতুন বলেন, ‘প্রতিদিনের ন্যায় আমরা এক সঙ্গে ঘরে ঘুমিয়ে যাই। হঠাৎ একটি গুলির শব্দ ও চিৎকার শুনতে পাই। বাইরে এসে দেখি আমার স্বামী ঘরের বারান্দায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তার বাম পায়ে গোড়ালির একটু ওপরে গুলি করা হয়েছে। কে বা কারা এবং কেন আমার স্বামীকে মেরেছে আমরা জানি না। এ ঘটনার বিচার চাই।’
রেজাউল ইসলামরে চাচা আরশেদ প্রামাণিকের ছেলে জীবন আহম্মেদ বলেন, ‘আমার চাচার কাছে চাঁদা দাবি করে সন্ত্রাসীরা। আমার বাবা বিষয়টি গ্রামপুলিশ মনিরুলকে জানালে তাঁরা গত রাতে এসে দরজা ভেঙে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে। তাঁরা আমার বাবাকে এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করে চলে যায়।’
সাবেক ইউপি সদস্য কালাম শেখ বলেন, ‘রেজাউল প্রামাণিক চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি আমি গ্রামপুলিশ মনিরুল ইসলামকে জানাই। এরপর গত রাতে আমার বাড়িতে হামলা ও গুলিবর্ষণ করে।’
তবে আব্দুর রাজ্জাক শেখ ও মোহাম্মদ আলী জানান, তাঁদের বাড়িতে রাতে কেন হামলা ও গুলিবর্ষণ করা হয়েছে এ বিষয়ে তাঁরা কিছু জানেন না।
পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ‘আহত গ্রামপুলিশ সদস্য মনিরুল ইসলামকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তিনটি ওয়ান শুটার গানের গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। চাঁদা আদায়ের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার অভিযান চলছে।’