আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। একই আদালতে বেনাপোল কাস্টম হাউসের সাবেক কমিশনার এবং শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী এবং তাঁর স্ত্রী ফেরদৌস সুমিরও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই নিষেধাজ্ঞা দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পৃথক আদেশ দেন বলে আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন দপ্তর থেকে জানা গেছে।
আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক সাবেক এই মন্ত্রীর দেশ থেকে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম। আবেদনে বলা হয়, মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে ঠিকাদারি কাজে কমিশন গ্রহণ, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎপূর্বক বিদেশে পাচারসহ নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগটি অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক দেশত্যাগ করে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধান কার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তার বিদেশ গমন রহিত করা একান্ত আবশ্যক।
স্ত্রীসহ বেলাল হোসেন চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
বেনাপোল কাস্টম হাউসের সাবেক কমিশনার এবং শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী এবং তার স্ত্রী ফেরদৌস সুমির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন।
আবেদনে বলা হয়, বেলাল হোসাইন চৌধুরীর দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাইসহ ঘুষ, দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। অনুসন্ধানকালে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বেলাল হোসাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত অভিযোগসহ বিভিন্ন গোপনীয় উৎসের মাধ্যমে
জানা যায়, বেলাল হোসেন ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে-বেনামে দেশে ও কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে প্রচুর স্থাবর অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তা ছাড়া তিনি তাঁর ভাইসহ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ডেভেলপার, রিয়েল এস্টেট কোম্পানিসহ শেয়ার বাজারে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছেন মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ অর্জিত অর্থ দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভিন্ন মাধ্যমে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন মর্মেও অনুসন্ধানকালে তথ্য পাওয়া যায়।
আদালতে দুদকের আবেদনে আরও বলা হয়, অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী সপরিবারে গোপনে দেশত্যাগ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি দেশত্যাগ করে বিদেশে পালিয়ে গেলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র প্রাপ্তিতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে। তা ছাড়া সার্বিক অনুসন্ধানকাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে।
শুনানি শেষে আদালত দুটি আবেদন মঞ্জুর করেন এবং সাবেক মন্ত্রীসহ তিনজনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে পৃথক পৃথক আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদর্শের কবি পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পুলিশ সুপারকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।