টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর ওপর নির্মিত যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার ভাটিতে সদ্য নির্মিত রেলসেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
আজ রোববার সকাল ৯টায় যমুনা রেলসেতু পূর্ব টাঙ্গাইল প্রান্ত এবং পশ্চিমে সিরাজগঞ্জ প্রান্ত থেকে একসঙ্গে এক জোড়া ট্রেন চলাচল করে। পরে বিকেল পর্যন্ত একাধিকবার দুটি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার থেকে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল সম্পন্ন করে।
এই পরীক্ষামূলক চলাচল আগামীকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত চলবে।
এর আগে গত বছরের ২৬ নভেম্বর ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার থেকে সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার গতিতে সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হয়েছিল।
যমুনা রেলসেতু প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে আজ সকাল ৯টা থেকে সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত থেকে একযোগে দুটি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করে। এই পরীক্ষামূলক চলাচল সোমবার সমাপ্ত হবে।
প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, দুই দিন পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল সম্পন্ন হলে সেই প্রতিবেদন রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর মন্ত্রণালয় উদ্বোধনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আশা করছি আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি অথবা শেষের দিকে যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন করা হবে।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নকশা প্রণয়নসহ সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়। পরবর্তীকালে এর মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়। প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ দেশীয় অর্থায়ন এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
১৯৯৮ সালে যমুনা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিং শুরু হয়।