মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে বসে শ্রমিক হাট। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শ্রমিকেরা আসেন এখানে। সকালে সূর্যের আলো উঁকি দেওয়া আগে থেকেই রাস্তার দুপাশে ভিড় জমতে থাকে শ্রমিকদের। দর–কষাকষির মাধ্যমে নিজেদের শ্রম বিক্রি করেন নারী ও পুরুষ শ্রমিকেরা। তবে পুরুষের তুলনায় নারী শ্রমিকদের শ্রমের মূল্য কম।
এসব শ্রমিকদের বেশির ভাগ উত্তরবঙ্গের রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় থেকে বিভিন্ন মৌসুম আলু রোপণ, উত্তোলন, ধান আবাদসহ মাটি কাটা কাজের জন্য আসেন। এদের মধ্যে আবার অনেক শ্রমিকেরা আট দশ-জনের একেকটি দল গঠন করে থাকে। এসব দলের মধ্যে একজন দলনেতা থাকে। দলনেতা কৃষকদের সঙ্গে দর–কষাকষি করে শ্রমের দাম নির্ধারণ করেন।
টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় পুরোদমে চলছে আলু রোপণ। আর এই আলু রোপণকে কেন্দ্র করে এখন এসব হাট জমেছে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে। আলদি বাজার, বালিগাঁও বাজার, বঘিয়া বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজারে এমন শ্রম বেচা-কেনার হাট বসতে দেখা যায়। আলু চাষাবাদে পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকও মাঠে কাজ করছেন সমান তালেই। তবে পুরুষের শ্রমের মূল্যের চেয়ে নারী শ্রমিকদের শ্রমের মূল্য অনেকটাই কম। যেখানে পুরুষ শ্রমিকদের শ্রমের মূল্য ৬০০ টাকা সেখানে নারী শ্রমিকেরা পাচ্ছেন ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা।
বালিগাঁও শ্রম বাজারে নারী শ্রমিক সামসুন্নাহর বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর আলু লাগানো ও ওঠানোর সময় এখানে কাজ করতে আসি। আমরা নারীরা পুরুষের সঙ্গে সমান তালে কাজ করলেও মূল্য পাই কম। সকালে কাজে যাই কাজ শেষে বাড়িতে আসি বিকেল ৪টার দিকে।’
কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, ‘নারীদের তুলনায় পুরুষ অনেক বেশি পরিমাণ কাজ করেন। পুরুষের কাজের গতি নারী শ্রমিকের চেয়ে অনেক বেশি। তাই নারী শ্রমিকের চেয়ে পুরুষ শ্রমিকদের বেশি টাকা দিয়ে কাজে নেওয়া হয়। সব সময় শ্রমিকের দাম একইরকম হয় না। তবে নারীদের দিন প্রতি দেওয়া হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আর পুরুষদের দেওয়া হয় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।