টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে গ্রামীণ রাস্তায় সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের প্রায় সাড়ে ৭ কোটির টাকার দরপত্রের লটারি নিয়ে মারামারি ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৩ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলা হলরুমে এ ঘটনা ঘটে।
মারামারির ঘটনার পর লটারির কার্যক্রম স্থগিত করে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত ই জাহান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর নাগরপুরে ১০টি সেতুর জন্য ৭ কোটি ২৩ লাখ ৭৫ হাজার ১২৬ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। ২০২১-২২ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে গ্রামীণ রাস্তায় এগুলো নির্মাণ করা হবে। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গত ৫ জানুয়ারি।
আর সোমবার ছিল লটারির নির্ধারিত দিন। দুপুর ১টার দিকে লটারি শুরু করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। লটারির শেষ মুহূর্তে এসে দুটি কাজের লটারি বাকি থাকতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুদরত আলী কাশাদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে খালের ওপর প্রায় ৭২ লাখ টাকার সেতু নির্মাণের কাজটি লটারি না করতে ইউএনও ও অংশগ্রহণকারী সকল ঠিকাদারকে অনুরোধ করেন। এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগও অপর একটি কাজের দাবি জানায়। এ ঘটনায় ঠিকাদারেরা আপত্তি জানালে শুরু হয় উত্তেজনা। হলরুমের ভেতর ব্যাপক হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি।
মেসার্স তাবিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী পারভেজ হাসান অভিযোগ করে বলেন, কুদরতের অনুসারী ও ছাত্রলীগের নেতারা তাঁকেসহ কয়েকজন ঠিকাদারের ওপর হামলা করেন। এ সময় তিনিসহ আহত হন আমিন ট্রেডার্সের কাজি জহির সুমন, নজরুল ট্রেডার্সের নজরুল ইসলাম।
এ ঘটনায় ঠিকাদারদের বিক্ষোভের মুখে ইউএনও লটারি স্থগিত করেন। এ ঘটনার প্রতিকার ও হামলাকারীদের বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দিয়েছেন জেলার ঠিকাদার নেতৃবৃন্দ।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুদরত আলী বলেন, কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি। লটারির শেষ মুহূর্তে একটি সেতুর কাজ চেয়েছিল ছাত্রলীগ। ভিডিও করা ও ঠিকাদারদের বসা নিয়ে একটু ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে।
নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত ই জাহানের মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি তা ধরেননি। তবে তাঁর স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, লটারির শেষ সময়ে এসে ঠিকাদারদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে লটারির সকল কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে।