বগুড়ায় দুই সাংবাদিকসহ তিনজনের ওপর হামলার ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। গতকাল রোববার রাত পৌনে ১২টার দিকে তথ্য–প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বগুড়া শহরের বনানী এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের হেফাজত থেকে দুটি বার্মিজ চাকু, দুটি মোটরসাইকেল ও তিনটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার কিশোরেরা হলেন বগুড়া শহরতলির গণ্ডগ্রাম দক্ষিণপাড়া এলাকার আব্দুল মতিনের ছেলে রাকিবুল ইসলাম রাকিব (২২), গণ্ডগ্রাম উত্তরপাড়া এলাকার বেলাল হোসেনের ছেলে হাবিবুর রহমান রকি (২৪), গণ্ডগ্রাম নতুনপাড়া এলাকার হারুনুর রশিদের ছেলে তারিকুল ইসলাম (২২), গণ্ডগ্রাম নতুনপাড়া এলাকার জিন্নাহ খানের ছেলে জিসান খান (২১), গণ্ডগ্রাম সারিয়াকান্দিপাড়া এলাকার মৃত মিলন হোসেনের ছেলে জিহাদ (২০) ও মালতিনগর স্টাফ কোয়ার্টার বটতলা এলাকার আনারুল সরকারের ছেলে টুটুল (২০)।
বগুড়া জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ পরিদর্শক রাকিব হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শনিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শহরের জেলখানা মোড় এলাকায় ফ্রেস জুস বারের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি খোরশেদ আলম, অনলাইন পোর্টাল বগুড়া লাইভের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট আসাফুদৌলা নিয়ন ও তৌফিকুল ইসলাম নিরব।
আহত সাংবাদিক নিয়ন ও খোরশেদকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাঁদের মাথা, চোখ ও হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
সাংবাদিক খোরশেদ বলেন, ‘আমরা বেলা ৩টার দিকে জুস বারটিতে যাই। জুস পান করে বের হওয়ার সময় হঠাৎ ১২-১৪ জন যুবক নিয়নকে ঘিরে ধরে। আমি এগিয়ে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা আমাকে মারধর শুরু করে। মাথায় কিল-ঘুষি দেয়। এরপর এক যুবক চাকু বের করলে নিয়ন আমাকে বাঁচাতে গেলে ৮-৯ জন তাকে রাস্তায় ফেলে নির্মমভাবে মারধর করে।’
ডিবি কর্মকর্তা রাকিব হোসেন জানান, ঘটনার পরপরই সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণসহ গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে হামলাকারীদের শনাক্ত করে একাধিক অভিযানে তাঁদের আটক করা হয়।
ডিবি কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সবাই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তাঁদের নামে এলাকাবাসীর অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। আটক রাকিবুল ইসলাম রাকিবের বিরুদ্ধে এর আগে হত্যা ও মাদক আইনে দুটি মামলা এবং হাবিবুর রহমান রকির বিরুদ্ধে অস্ত্র, ডাকাতির প্রস্তুতি, হত্যাচেষ্টা, মাদকসহ ছয়টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে শাজাহানপুর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দিয়েছে।