গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অতিরিক্ত টাকা আদায় এবং সিন্ডিকেটসহ আটটি অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে এসব প্রমাণ পাওয়া যায়। এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দুদক গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়।
জানা গেছে, অভিযানের শুরুতে রোগী সেজে গোপনে হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়মের ভিডিও ধারণসহ তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পরে হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও টিকিট কাউন্টারসহ বিভিন্ন বিভাগে অভিযান পরিচালনা করে দুদক টিম। অভিযানে টিকিট কাউন্টারে অতিরিক্ত টাকা আদায়, বহির্বিভাগে অধিকাংশ ডাক্তার ও কর্মচারী অনুপস্থিত, স্টোরে কম্বল থাকা সত্ত্বেও রোগীদের না দেওয়া, সার্টিফিকেট-বাণিজ্যে হাসপাতালটির চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সোহেল শেখ ও কুদ্দুস গাজীর একটি সিন্ডিকেটসহ আটটি অনিয়ম ধরা পড়ে।
এ সময় দুদকের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায়, মো. সোহরাব হোসেন সোহেল, উপসহকারী পরিচালক আফসার উদ্দিন, মো. আল-আমিন হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেষ বিশ্বাস বিভিন্ন মেশিন অকেজো থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘মেশিনগুলো সচল করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও এ বিষয়ে কোনো সাহায্য আমরা পাইনি।’
৮০ শতাংশ ডাক্তার অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ডাক্তারেরা সকালে রাউন্ডের পরই সাধারণত বহির্বিভাগে রোগী দেখতে বসেন। গতকাল দু-একজন ডাক্তারকে আমরা বহির্বিভাগে দেখতে পাইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘টিকিটে অতিরিক্ত টাকা কেন নেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে তাঁদের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। হাসপাতালে অনিয়মের বিষয়ে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা অবশ্যই নেব আমরা।’
দুদক গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সে পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সরেজমিনে হাসপাতালে আসি। হাসপাতালে টিকিট কাউন্টারে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। সকাল ৯টার পর বহির্বিভাগে ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও কয়েকজন ছাড়া অন্যদের পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় এখানে ডাক্তারদের মধ্যে সেবা দিতে অনীহার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।’ কর্তৃপক্ষ অনিয়মের বিরুদ্ধে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।