হোম > সারা দেশ > ঢাকা

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ফ্রিজে আগুন, পরে ৮ বাড়িতে হামলা-লুটপাট

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  

প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০১: ০৭
নিজ দোকান থেকে ফরহাদকে ফ্রিজ বের করে আনতে দেখা যায়। পরে ফ্রিজ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গলদাপাড়া গ্রামে জমি বিরোধের জেরে নিজের দোকানের ফ্রিজে আগুন দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর পর আটটি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিন প্রবাসীসহ আট পরিবারের ২০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গতকাল শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ প্রথমকে একজনকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৩৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, অভিযুক্ত ফরহাদ নিজেই তাঁর দোকানের ফ্রিজে আগুন দিচ্ছেন। এরপর আটক ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক আছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার গলদাপাড়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের তিন ছেলে জামাল উদ্দিন, কামাল উদ্দিন ও কাজল ফকির দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে থাকেন। প্রতিবেশী মৃত আবুল হাসেনের ছেলেদের সঙ্গে তাঁর জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলছে।

বাড়িতে হামলা চালানোর পর জিনিসপত্র এলোমেলো পড়ে আছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

এর জেরে প্রতিপক্ষ মফিজ উদ্দিনকে ফাঁসাতে কৌশলে ফরহাদ নিজের মুদিদোকান ভাঙচুর চালিয়ে দোকানের ফ্রিজ বাইরে বের করে নিজেই ফ্রিজে আগুন জ্বালিয়ে দেন। এরপর দোকানপাট ভাঙচুর ও ফ্রিজে আগুন দেওয়ার অভিযোগে মফিজ উদ্দিনের মেয়েজামাই সিরাজ উদ্দিনকে আটক করে ব্যাপক মারধর করে পুলিশে দেয় আবুল হাসেনের লোকজন।

ভুক্তভোগী মফিজ উদ্দিন জানান, প্রতিবেশী আবুল হাসেনের সঙ্গে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। শনিবার সকালে কথা-কাটাকাটির পর আবুল হাসেনের ছেলে ফরহাদ নিজ দোকানে ভাঙচুর চালিয়ে ফ্রিজ বাইরে এনে আগুন ধরিয়ে দেন এবং তাঁর মেয়েজামাই সিরাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। পরে সিরাজকে আটক করে ব্যাপক মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ করে আবুল হাসেনের লোকজন। তবে আগুন লাগানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশ সিরাজকে ছেড়ে দেয়।

মফিজ উদ্দিন বলেন, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আবুল হাসেনের ছয় ছেলে ভাড়া করা সন্ত্রাসীদের নিয়ে তাঁর ছেলেসহ স্বজনদের আট বাড়িতে হামলা চালান। বসতবাড়ির দরজা-জানালা ভেঙে গবাদিপশুসহ সবকিছু লুটের পর ট্রাকে করে নিয়ে যান।

মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমার তিন ছেলে প্রবাসে। বাড়িতে শুধু নারী ও শিশুরা ছিল। হামলাকারীরা আমাদের মারধর করে গবাদিপশু ও ঘরের আসবাব লুট করে নিয়ে গেছে।’

প্রবাসী জামাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুম আক্তার বলেন, ‘অর্ধশতাধিক লোক ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। চারটি গবাদিপশু ও ঘরের দামি জিনিসপত্র লুট করে ট্রাকে নিয়ে যায়।’

আরেক প্রতিবেশী নাসিমা খাতুন বলেন, ‘আমার অসুস্থ স্বামী ও সন্তানদের রোজগারে তৈরি বাড়িতে হামলা চালিয়ে সবকিছু লুট করেছে। পুরুষ সদস্য না থাকায় আমরা কোনো প্রতিরোধ করতে পারিনি।’

পুড়ে যাওয়া ফ্রিজ। ছবি: আজকের পত্রিকা

অভিযোগের বিষয়ে আবুল হাসেনের ছেলে আলফাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের দোকানে ভাঙচুর ও ফ্রিজে আগুন দিয়েছে মফিজ উদ্দিনের লোকজন। স্থানীয়রা সিরাজ উদ্দিনকে আটক করে পুলিশে দেয়।’

তবে ভিডিওতে তাঁর ভাই ফরহাদকে ফ্রিজে আগুন দিতে দেখা গেছে—এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এটি আমি জানি না। লুটপাট কারা করছে, আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, একজনকে আটক করে রাখছে, এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে একজনকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। এরপর একটি ভিডিও পেয়ে যাচাই-বাছাই করে আটক ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বসতবাড়িতে লুটপাটের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

স্ত্রী-ছেলেসহ নাফিজ সরাফতের ২২ ফ্ল্যাট, বাড়ি ও জমি ক্রোকের নির্দেশ

ফরিদপুরে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাস পুকুরে, নিহত ৫

পুরানা পল্টনে ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

রাজধানীর পল্টনে বহুতল ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৬ ইউনিট