নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানীর রামপুরা এলাকার মেরাদিয়া বাজারে সকাল সকাল কাঁচাবাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মো. আজিজুর রহমান। বাজার করতে এসে গলদঘর্ম অবস্থা। তাঁর হাতে কিছু ডিম, লাক শাকের আঁটি আর একটি পেঁপে। বললেন, ‘বাজার করতে এসে শুধু পেঁপে কিনেছি। পেঁপে ছাড়া সব তরকারির দাম ১০০ টাকার ওপরে। আমাদের নিম্ন-মধ্যবিত্তদের সংসার আর চলছে না ভাই। খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
আজ শুক্রবার সকাল থেকে মেরাদিয়া ও রামপুরা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, দু-একটা সবজি ছাড়া কেজিতে ১০০ টাকার কম মূল্যের সবজি বাজারে নেই। বাজারভেদে কিছু সবজিতে ৫-১০ টাকা কম-বেশি দেখা গেছে।
সকালের বাজারদর অনুযায়ী—শিম প্রতি কেজি ২৮০ টাকা, বরবটি ১৪০ টাকা, পটোল ১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৯০ টাকা, ফুলকপি ১০০ টাকা, ধুন্দুল ১০০ টাকা, বেগুন ২২০ টাকা, কাঁকরোল ১২০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ১০০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা প্রতি কেজি। এ ছাড়া মাঝারি আকারের চালকুমড়া প্রতিটি ৯০ টাকা, লাউ ৯০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ কেজি ৩৫০ টাকা।
আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, রসুন ৩৩০ টাকা, আদা ৩৪০ টাকা দরে।
খুচরা বিক্রেতা মো. সজীব মিয়া বলেন, ‘বাজার তো বাড়তি। আমগোই বেশি দামে কারওয়ান বাজারতোন আনতে অয়। ওরা বলে, মাল আহে না, পইচ্যা গেছে। ১০০ টাকায় কিন্যা ১২০ টাকায় বেচি। হের মইদ্যে আবার ক্যারিং খরচ আছে।’
দেখা গেছে, ডিমের বাজার কিছুটা কমলেও দোকানভেদে বিভিন্ন দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকা দরে। খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গতকালের (বৃহস্পতিবার) বেঁধে দেওয়া ডিমের এই দামে বিক্রি হচ্ছে। আজকে তাঁরা এখনো মূল্যতালিকা পাননি।
মাছ-মুরগির বাজারে গিয়ে দেখা যায়, নিম্ন আয়ের মানুষের নাগাল পেরিয়ে গেছে মাছের বাজার। পাঙাশ মাছের কেজি ২০০ টাকা, রুই-৩৪০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, কোরাল ৬০০ টাকা, শিং ৫৫০, চিংড়ি ৭০০ থেকে ২০০০ টাকা।
অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির কেজি ২২০ টাকা, সোনালি ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
বাজারে আসা পোশাকশ্রমিক মরিয়ম খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শাকপাতা কিনি। যা বেতন পাই, তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতি মাসে ধারদেনা হয়। বাজারে এখন কেনার মতো কোনো তরকারি আর নাই। কয় দিন পর না খাইয়া থাকতে অইব।’